২০২৩ সালে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার অভিযোগে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) ১০৮ জন নেতাকর্মীকে কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত।
বৃহস্পতিবার দেওয়া সর্বশেষ রায়ে দলের জ্যেষ্ঠ নেতা ও বিরোধী দলের নেতা ওমর আইয়ুব খানকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি পিটিআইয়ের ছয়জন সাংসদকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।
২০২৩ সালের ৯ মে দুর্নীতির মামলায় আদালতে হাজির করার সময় ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর দেশজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ শুরু হয়। তখন নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ইমরানপন্থীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। হামলার শিকার হয় সরকারি ও সামরিক স্থাপনাও। প্রাণ হারান অন্তত ১০ জন। এরপর থেকেই দলটির বিরুদ্ধে শুরু হয় দমনপীড়ন।
গত দুই বছরে পিটিআইয়ের বহু নেতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ঘোষণা করা হয়েছে। তবে সর্বশেষ রায়গুলো দলটির জন্য বড় ধাক্কা হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
এই রায়ের নিন্দা জানিয়েছে পিটিআই। এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া বিবৃতিতে দলটি বলেছে, ‘পাকিস্তানের বিচার বিভাগীয় ইতিহাসে এই প্রথম জাতীয় পরিষদ ও সিনেট- দুই কক্ষের বিরোধী দলের নেতাদের, শুধুমাত্র ইমরান খানের রাজনৈতিক দর্শনে বিশ্বাসী হওয়ার অপরাধে শাস্তি দেওয়া হলো। এটি দেশের ইতিহাসে এক দুঃখজনক ও লজ্জাজনক অধ্যায়।’
দলটি জানিয়েছে, তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাবে।
পিটিআইয়ের মিডিয়া উপদেষ্টা জুলফি বুখারি বলেন, ‘এটি গণতন্ত্রের জন্য এক কালো দিন। একের পর এক বিরোধীদলীয় নেতাকে শাস্তি দেওয়া কোনো সুস্থ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার লক্ষণ নয়। এটি পাকিস্তানের ইতোমধ্যেই দুর্বল গণতন্ত্রকে আরও ঝুঁকির মুখে ফেলবে।’
২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাবন্দি আছেন পিটিআইপ্রধান ইমরান খান। এক সময়ের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা এই রাজনীতিক এখনও পাকিস্তানে ব্যাপক জনপ্রিয়। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ফাঁসসহ ১৫০টির বেশি মামলা রয়েছে, যেগুলোকে তিনি ও তার সমর্থকেরা ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ বলে মনে করছেন।