ভারতের রাজধানী দিল্লির পাশে আধুনিক শহর গুরগাঁও। আকাশছোঁয়া অট্টালিকার পাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ঝুপড়ি বস্তিতে থাকেন পশ্চিমবঙ্গ থেকে আসা দরিদ্র দিনমজুর, গৃহকর্মী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও ছিন্নমূল মানুষেরা।
সম্প্রতি ‘অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ চিহ্নিত করার নামে দিল্লি, গুরগাঁওসহ বিভিন্ন শহরে অভিযান শুরু করেছে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার। শত শত বাংলাভাষী মুসলিমকে আটক করে হোল্ডিং সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।
প্রশাসনের দাবি, এদের অনেকে অবৈধভাবে ভারতে ঢুকেছেন এবং পরিচয়পত্র না থাকায় দিনমজুর বা গৃহকর্মীর কাজ করছেন। তবে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বৈধ পরিচয়পত্র দেখালেও পুলিশ সেগুলো ‘জাল’ বলে বাংলাদেশি প্রমাণের চেষ্টা করছে। গুরগাঁওয়ে ১৫ বছর ধরে কাজ করা দিনমজুর আথার আলি শেখ বলেন, ‘ভোটার আইডি দেখানোর পরও পুলিশ বলল জাল। ছয় দিন ধরে না খেয়ে বসে ছিলাম।’
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিযান শুরুর পর বহু বাঙালি-মুসলিম পরিবার রাতারাতি ঘরছাড়া হয়েছে। কেউ কাজ, সন্তান ও সংসার ফেলে গ্রামে ফিরে গেছেন। বিজেপি সরকার অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের ভাষ্য, বহু বছর ধরে অনুপ্রবেশকারীরা ভারতীয়দের অধিকারে ভাগ বসাচ্ছে।
নিম্ন আয়ের মানুষদের টার্গেট করায় শহরে গৃহকর্মী ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীর সংকট দেখা দিয়েছে। সড়কে জমছে আবর্জনার স্তূপ। বস্তিতে থাকা মানুষ রাতে কাগজপত্র বালিশের নিচে রেখে ঘুমাচ্ছেন–যেকোনো সময় ধরা পড়ার ভয়ে।
দিল্লির পাশাপাশি আসামসহ অন্য রাজ্যেও চলছে অনুপ্রবেশবিরোধী অভিযান। সমালোচকদের অভিযোগ, ভাষা, ধর্ম ও দরিদ্রতা–এই তিন মানদণ্ডে অসহায় নাগরিকদের হেনস্তা করা হচ্ছে। কেউ নাগরিকত্বের প্রমাণ দিয়ে ছাড়া পেলেও পরে আবার আটক হয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।