জরুরি পরিস্থিতিতে কারো শ্বাসপ্রশ্বাস বা হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে গেলে দ্রুত যা করতে হয়, তার একটি হলো CPR। এই পদ্ধতি বহু মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে, কিন্তু অনেকেই এখনো জানেন না CPR আসলে কী এবং কখন এটি ব্যবহার করা প্রয়োজন।
CPR-এর পূর্ণরূপ হলো Cardiopulmonary Resuscitation। এটি একটি জরুরি চিকিৎসা পদ্ধতি, যা হার্টবিট ও শ্বাস বন্ধ হয়ে গেলে তা আবার চালু করতে সহায়তা করে। বিশেষ করে হৃদযন্ত্র বা শ্বাসযন্ত্র হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের জীবন রক্ষায় এটি অত্যন্ত কার্যকর।
সাধারণত নিম্নোক্ত অবস্থায় CPR প্রয়োজন হতে পারে:
কেউ হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে গেলে
শ্বাস নিচ্ছে না বা অনিয়মিত শ্বাস নিচ্ছে
হৃদস্পন্দন থেমে গেলে (যেমন: হার্ট অ্যাটাক, বজ্রপাত, ডুবে যাওয়া, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট)
এই পদ্ধতিতে দুটি ধাপে কাজ করা হয়:
১. চেস্ট কম্প্রেশন (বুক চাপ দেওয়া):
হৃদপিণ্ড রক্ত পাম্প করতে না পারলে, বুকের মাঝখানে চাপ দিয়ে তা কৃত্রিমভাবে চালানো হয়। প্রতি মিনিটে প্রায় ১০০-১২০ বার চাপ দেওয়া হয়।
২. রেসকিউ ব্রিথিং (শ্বাস দেওয়া):
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কেউ রোগীর নাক চেপে ধরে মুখে শ্বাস দেন, যাতে অক্সিজেন ফুসফুসে প্রবেশ করতে পারে।
সাধারণ মানুষের জন্য যেটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো হ্যান্ডস-অনলি CPR, অর্থাৎ শুধু বুক চেপে চাপ দেওয়া:
অজ্ঞান ব্যক্তিকে ডেকে দেখুন সাড়া দেয় কি না
সাড়া না পেলে দ্রুত ৯৯৯-এ ফোন করুন
রোগীকে চিত করে শুইয়ে বুকের মাঝখানে দুই হাত রেখে ছন্দ অনুযায়ী দ্রুত ও গভীরভাবে চাপ দিন
CPR দেওয়ার সময় মাথা ঠান্ডা রাখা জরুরি
যাদের প্রশিক্ষণ নেই, তারা কেবল চেস্ট কম্প্রেশন অংশটি করলেই উপকার হতে পারে
CPR দেওয়ার পাশাপাশি যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, CPR সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে হঠাৎ অসুস্থতাজনিত মৃত্যুর হার অনেক কমানো সম্ভব। বিশেষ করে বজ্রপাত, হৃদরোগ, জলডুবি কিংবা দুর্ঘটনার সময় তাৎক্ষণিক CPR জীবনের শেষ আশ্রয় হতে পারে।
[…] […]