গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে প্রকাশ্যে হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় সন্দেহভাজন পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও তদন্তের স্বার্থে তাদের পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে নগরের বাসন থানায় নিহত তুহিনের বড় ভাই মো. সেলিম বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। সেই মামলায় জড়িত সন্দেহে ওই পাঁচজনকে আটক করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন খান বলেন, ‘সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যার ঘটনায় তার বড় ভাই মো. সেলিম বাদী হয়ে সন্দেহভাজন ৫ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মামলাটি রেকর্ড হয়েছে। এরপর রাতেই বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওই পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’
আজ শুক্রবার সকালে নগরীর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিক তুহিনের ময়নাতদন্ত শেষে বাদ জুমা চান্দনা চৌরাস্তা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এনসিপির নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক এবং এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ নেন।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে গাজীপুর নগরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় তুহিনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার সেই দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। অভিযোগ ওঠে, রাজনৈতিক দলের চাঁদাবাজরা তুহিনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
সাংবাদিক তুহিন খুন হওয়ার স্থান থেকে প্রায় এক’শ গজের মধ্যে পুলিশ বক্স থাকলেও পুলিশ আসার আগেই সন্ত্রাসীরা তুহিনকে খুন করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে গাজীপুরে বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে।
তুহিন হত্যার প্রতিবাদে ও আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সাংবাদিক ইউনিয়ন গাজীপুরের উদ্যোগে শুক্রবার সকালে গাজীপুর প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। এছাড়াও গাজীপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও থানা প্রেসক্লাবে তুহিন হত্যার প্রতিবাদ ও আসামিদের গ্রেপ্তার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ পালন করেন সাংবাদিকরা।
প্রসঙ্গত, নিহত আসাদুজ্জামান তুহিন ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া থানার ভাটিপাড়া গ্রামের হাসান জামালের ছেলে। তিনি দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকায় স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে গাজীপুরে কাজ করতেন। তৌকি (৫) ও ফাহিম (২) নামে তার দুটি ছেলে রয়েছে। স্ত্রীর ফরিদা আক্তারসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তিনি চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বসবাস করতেন।