বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:১০ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
খুলনায় মৃত ৬জন সরকারি কর্মচারীর পরিবারকে ৪০ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর মোল্লাহাটে মহাসড়কে যুবককে গুলি শরণখোলায় বিপুল উৎসাহ ও আনন্দমূখর পরিবেশে পালিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গা উৎসব এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ও চিকিৎসাভাতা নিয়ে সুখবর ২২ মাসের বকেয়া বেতন ভাতা প্রদানের দাবিতে খুলনায় কর্মকর্তা কর্মচারীদের মানববন্ধন  গণভোট’ই সমস্যার সমাধান হতে পারে:-শেখ মোস্তাফিজুর রহমান খুলনায় ঘুমন্ত অবস্থায় যুবককে গুলি করে হত্যা পূর্ব সুন্দরবনের করমজলে কুমিরের আক্রমণে নিহত জেলের লাশ উদ্ধার মহেশপুর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রয়াত শিক্ষকদের স্মরণ  সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত চরফ্যাশনে কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নাজিম উদ্দিন আলম

টেকসই কৃষি, বনায়ন ও নগরায়ণে তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান ইইউ রাষ্ট্রদূতের

খুলনা অফিস / ৫৮ বার পড়া হয়েছে
সময়ঃ বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৯:১৬ অপরাহ্ন

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এনডিসি সংলাপ অনুষ্ঠিত
সৈকত মোঃ সোহাগ, খুলনা অফিস:
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ও ইইউ ডেলিগেশনের প্রধান মাইকেল মিলার বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন আজকের বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এটি শুধু পরিবেশ নয়, অর্থনীতি ও সমাজের প্রতিটি খাতকে প্রভাবিত করছে। কৃষি, বনায়ন, নগরায়ণ, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা; সবকিছুই ঝুঁকির মুখে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পরিবেশবান্ধব কৌশল গ্রহণ অপরিহার্য এবং এককভাবে কোনো দেশের পক্ষে কার্যকর পদক্ষেপ সম্ভব নয়; এর জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন।
আজ ১১ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে “NDC 3.0 for COP30: Dialogue on Agriculture, Forestry & Urbanisation” শীর্ষক সংলাপে কী-নোট স্পিকার হিসেবে বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স-বিআইপি ও ইয়ুথ ফর এনডিসি যৌথভাবে এ প্রোগ্রাম আয়োজন করে।
রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু ঝুঁঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত। এ দেশের কৃষি ও গ্রামীণ জীবিকা মারাত্মক হুমকির মুখে। তাই অর্থনীতি ও উন্নয়ন পরিকল্পনায় পরিবেশবান্ধব কৌশল গ্রহণ করা প্রয়োজন। তিনি উল্লেখ করেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় এককভাবে কোনো দেশের পক্ষে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ সম্ভব নয়। এর জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন। বিভিন্ন দেশের প্রযুক্তি, অভিজ্ঞতা ও উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়েই কার্যকর সমাধান বের করতে হবে।
তিনি বলেন, আজকের তরুণরা আগামী প্রজন্মের নেতৃত্ব দেবে। তাদের চিন্তা-ভাবনা ও নতুন ধারণার ভেতরেই লুকিয়ে আছে টেকসই ভবিষ্যতের সমাধান। নবায়নযোগ্য জ্বালানি, সবুজ প্রযুক্তি, টেকসই কৃষি ব্যবস্থা এবং পরিবেশবান্ধব নগর পরিকল্পনায় তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের সামনে ভয়াবহ জলবায়ু বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে। এখনই পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অস্তিত্ব ঝুঁকির মুখে পড়বে। তবে সমন্বিত উদ্যোগ নিলে এই সংকট মোকাবিলা সম্ভব।
শিক্ষা ও গবেষণার প্রসঙ্গে তিনি জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ বাড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এরাসমাস প্লাস কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশসহ বিশ্বের শিক্ষার্থীরা ইউরোপের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারছে, যা বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল করিম। তিনি বলেন, খুলনায় প্রতিদিন ঘূর্ণিঝড়, লবণাক্ততা, নদীভাঙন ও সমুদ্রপৃষ্ঠের বৃদ্ধির মতো জলবায়ু পরিবর্তনের বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হয়। তিনি উল্লেখ করেন, আগামী ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশনস্ (এনডিসি) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা জলবায়ু-স্মার্ট কৃষি, টেকসই বনায়ন এবং সহনশীল নগরায়ণকে প্রাধান্য দিবে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ইতোমধ্যেই লবণসহনশীল ফসল, ম্যানগ্রোভ সংরক্ষণ এবং টেকসই শহর পরিকল্পনার ওপর কাজ করছেন এবং যা সরকার ও উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে বিনিময় করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি উপকূলের মানুষকে বাস্তুচ্যুত করতে পারে এবং ঘরবাড়ি ও শহরগুলোকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। পানি ও খাদ্য নিরাপত্তা অনিশ্চিত হতে পারে। তিনি জানান, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সহযোগী হতে প্রস্তুত এবং নীতিগত আলোচনায় নেতৃত্ব দিতে সক্ষম।
অনুষ্ঠানে স্বাগত ও সমাপনী বক্তব্য রাখেন দি অফিস অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ আশিক উর রহমান। আরও বক্তব্য রাখেন বিআইপি’র প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. আদিল মুহাম্মদ খান ও ইয়ুথ ফর এনডিসির পক্ষে বক্তব্য রাখেন ফাইয়াজ।
প্যানেল ডিসকাশন পর্বে আলোচনা করেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের গ্রিন ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট ও সোশ্যাল প্রোটেকশন বিভাগের টিম লিডার এডউইন কোয়েককোয়েক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মোঃ জাকির হোসেন, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক ও ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মোঃ নাজমুস সাদাত এবং এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মোছাঃ সাবিহা সুলতানা। মডারেটর ছিলেন বিআইপি’র জেনারেল সেক্রেটারি শেখ মুহাম্মদ মেহেদী হাসান।
আরও বক্তব্য রাখেন ইইউ ডেলিগেশনের প্রোগ্রাম ম্যানেজার জুই চাকমা। তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচ্চশিক্ষা কর্মসূচি এরাসমাস প্লাসের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। এই প্রোগ্রাম আয়োজনে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভলেন্টিয়ারদের পক্ষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আয়মান আহাদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সুমাইয়া আক্তার ও তাসকিনা সাকিন। এ অনুষ্ঠানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ অংশগগ্রহণ করেন।
এর আগে সকালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ও ইইউ ডেলিগেশনের প্রধান মাইকেল মিলারকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। পরে তিনি উপাচার্যের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এসময় উপাচার্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য অবহিত করেন। পরে তাঁকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোগ্রাম খচিত ক্রেস্ট উপহার দেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ নূরুন্নবী ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটেগরির আরো খবর
Theme Created By AR.Host