গত ৯ বছরে খুলনা ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় শিল্প কারখানায় শৃংখলতা ফিরেছে। শ্রমিক অসন্তোষ এবং শ্রমিকদের বিভিন্ন ন্যায্য দাবি-দাওয়া নিয়ে সৃষ্ট সমস্যাগুলো অত্যান্ত দক্ষতার সাথে সামলাচ্ছেন এই প্রতিষ্ঠানটি।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে ২০১৬ সালে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-৬, খুলনা গঠনের পর হতে অত্র ইউনিটে কর্মরত অফিসার এবং ফোর্স খুলনা মহানগরীর খালিশপুর থানাধীন পিপলস জুট মিলস লিমিটেড এর অভ্যন্তরে অবস্থিত জরাজীর্ণ সিকিউরিটি ব্যারাকে অবস্থান করে খুলনার সকল শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদের যথাযথ দাবিসমূহ আদায়ে কাজ করে আসছে।
সূত্র জানায়, পরবর্তীতে যশোর জেলার অভয়নগর থানাধীন রাজঘাটে অবস্থিত সাবজোন-২ গঠন হওয়ার পর থেকে যশোর জেলার সকল শিল্প এলাকায় অফিসার ফোর্স দায়িত্ব পালন করে আসছে। বসবাস করার যথাযথ ব্যবস্থা না থাকার কারণে যশোর জুটি ইন্ডাস্ট্রিজ এর অভ্যান্তরে একটি পরিত্যাক্ত ভবনে অবস্থান করে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-৬, খুলনার অফিসার ফোর্স দায়িত্ব পালন করে আসছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ২১ এপ্রিল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-৬, খুলনার পুলিশ সুপার হিসেবে মোঃ আনছার উদ্দিন যোগদান করার পর থেকে ইউনিটের সার্বিক সমস্যা সমাধান, ফোর্সের কল্যাণ এবং শিল্প এলাকার সকল সমস্যা নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।
ইতোমধ্যেই ফোর্সের ব্যারাক নতুনভাবে সংস্কার, মেসের খাবারের মান উন্নত, বিশুদ্ধ পানির সু-ব্যবস্থা, ক্যান্টিন সংস্কার, বিদ্যুৎ এর সু-ব্যবস্থা, ফোর্সের সার্বিক সমস্যা সমাধানসহ নানাবিধ উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
ইতোমধ্যেই ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-৬, খুলনার সাবজোন-২, যশোর এ কর্মরত অফিসার ফোর্সদের থাকার সু-ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জানতে চাইলে পুলিশ সুপার মোঃ আনছার উদ্দিন বলেন, শিল্প কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য স্ব-শরীরে নিয়মিত ফ্যাক্টরী পরিদর্শন, মালিক-শ্রমিক সভা, ওপেন হাউজ যে, কমিউনিটি পুলিশিং এবং অন্যান্য সচেতনতামূলক কর্মকান্ড জোরদার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের আওতাধীন একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা। দেশের ইপিজেডসমূহ দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং রপ্তানি কার্যক্রম সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মোংলা ইপিজেডে ৩৫ টি শিল্প-প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম পরিচালনা করে, যেখানে প্রায় ১ হাজার ৪৫৮ জন শ্রমিক-কর্মচারী কর্মরত রয়েছে।
সম্প্রতি বাগেরহাট জেলার ৪টি সংসদীয় আসন নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্ন স্থানে মহাসড়কের উপর গাছের গুড়ি কেটে, বাস ও ট্রাক রেখে এবং গাড়ীর টায়ার পুড়িয়ে হরতাল পালন করে। উক্ত হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচির কারণে মোংলা ঘাটে ফেরী ও নৌ চলাচল বন্ধ ছিল। এছাড়াও খুলনা-মোংলা মহাসড়ক এবং আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কপথে শ্রমিক-কর্মচারীদের যাতায়াতে প্রতিবন্ধতা সৃষ্টি হয়। ইপিজেডের উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হয়। সময়মতো পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা, বিশেষ করে চীনা, কোরিয়ান ও জাপানি বিনিয়োগকারীরা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-৬ ইপিজেডের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রয়োজনীয় অফিসার-ফোর্স মোতায়ন করা হয়।
সূত্র জানায়, গত মে মাসে কুষ্টিয়া জেলার সদর থানাধীন বিট্রিশ আমেরিকান টোবাকো এ আন্দোলনের ফলে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে দীর্ঘদিন যাবৎ ফ্যাক্টরী বন্ধ ছিল। পরবর্তীতে ফ্যাক্টরীর নিরাপত্তার স্বার্থে খুলনা হতে ৫০ জন অফিসার ফোর্স প্রেরণ করা হয়। পরবর্তীতে মধ্যস্থতায় মালিকপক্ষ এবং শ্রমিক প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সকল সমস্যা সমাধান করা হয়।
গত ২৬ জুন দৌলতপুর জুট মিলস লিঃ এর লীজ এহিয়াকারী প্রতিষ্ঠান ফাল্গুন গ্রুপ পরিচালিত ইউনিয় ফুটওয়্যার টেকনোলজি লিমিটেড এর জুতা কারখানায় লে-অফ ঘোষিত হয়। কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে গত ২৭ জুন কারখানার অনুমান ১৬০-১৭০ জন শ্রমিক দৌলতপুর জুট মিলস লিঃ এর প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন। অগ্রিম তথ্যের ভিত্তিতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-০৬, খুলনা এর অতিরিক্ত অফিসার ও ফোর্স এবং মোবাইল টিম মোতায়েন থাকায় উক্ত স্থানে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
এছাড়া রূপসা ধানাধীন মেঘনা সিমেন্ট মিলস লিমিটেড, শাহনেওয়াজ সী ফুডস লিমিটেড এ কর্মরত শ্রমিকেরা তাদের বেতন ভাতা পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভ মালিক-শ্রমিক সতার মাধ্যমে শ্রমিকদের বেতন ভাতা পরিশোধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।