খালি পেটে ঘি খাওয়া—এখন এটি অনেকের সকাল শুরুর অংশ। বিশেষত বলিউড তারকাদের মাঝে এই প্রবণতা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মালাইকা অরোরা, শিল্পা শেঠি কিংবা কৃতী শ্যাননের মতো সেলিব্রিটিরা দাবি করছেন, এক চামচ ঘি তাদের ত্বককে টানটান রাখে এবং হজমশক্তি বাড়ায়। অনেকেই তাদের দেখাদেখি ঘি-কে “সুস্থতার চাবিকাঠি” হিসেবে গ্রহণ করছেন।
তারা বলছেন, এটি একটি আয়ুর্বেদিক অভ্যাস—সকালে খালি পেটে এক চামচ ঘি খেলে শরীর ভেতর থেকে পরিষ্কার থাকে। এই বিশ্বাস থেকেই ঘি এখন হয়ে উঠেছে অনেক স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের রোজকার রুটিনের অংশ।
তবে, এই অভ্যাস কি আদৌ নিরাপদ?
বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাদের মতে, ঘি আসলে পুরোপুরি ফ্যাট, যা ট্রাইগ্লিসারাইড দিয়ে গঠিত। এক গ্রাম ফ্যাটে যেখানে ৯ ক্যালোরি থাকে, সেখানে ঘি তুলনামূলকভাবে উচ্চ ক্যালোরির উৎস। প্রতিদিন অতিরিক্ত ঘি গ্রহণ করলে তা ওজন বাড়াতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
আয়ুর্বেদ বনাম আধুনিক জীবনধারা
আয়ুর্বেদিক চর্চায় ঘি’র ব্যবহার বহু পুরনো। তবে চিকিৎসকরা মনে করিয়ে দেন—আগেকার দিনে মানুষ শারীরিকভাবে অনেক বেশি পরিশ্রম করত। তাদের জন্য অতিরিক্ত ক্যালোরি ছিল প্রয়োজনীয়। কিন্তু বর্তমান শহুরে জীবনযাত্রায় সেই পরিশ্রম নেই। তাই তখনকার নিয়ম হুবহু এখন অনুসরণ করলে তা শরীরের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
হজমে ঘি?
আরেকটি প্রচলিত বিশ্বাস হলো, ঘি হজমে সহায়ক। কিন্তু অনেক গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট এই ধারণাকেও ভুল বলে জানিয়েছেন। বরং খালি পেটে ফ্যাট গ্রহণ করলে অনেকের অম্বল বা অ্যাসিডিটির সমস্যা বাড়তে পারে।
খালি পেটে ঘি খাওয়া যে একেবারে অকার্যকর বা ক্ষতিকর—তা বলাও সঠিক নয়। তবে প্রতিটি শরীরের চাহিদা ও অবস্থা ভিন্ন। তাই শুধু সেলিব্রিটির দেখানো ট্রেন্ড নয়, নিজের শরীরের কথা চিন্তা করেই খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। যেকোনো নতুন রুটিন শুরু করার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।