বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৪৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
খুলনায় মৃত ৬জন সরকারি কর্মচারীর পরিবারকে ৪০ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর মোল্লাহাটে মহাসড়কে যুবককে গুলি শরণখোলায় বিপুল উৎসাহ ও আনন্দমূখর পরিবেশে পালিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গা উৎসব এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ও চিকিৎসাভাতা নিয়ে সুখবর ২২ মাসের বকেয়া বেতন ভাতা প্রদানের দাবিতে খুলনায় কর্মকর্তা কর্মচারীদের মানববন্ধন  গণভোট’ই সমস্যার সমাধান হতে পারে:-শেখ মোস্তাফিজুর রহমান খুলনায় ঘুমন্ত অবস্থায় যুবককে গুলি করে হত্যা পূর্ব সুন্দরবনের করমজলে কুমিরের আক্রমণে নিহত জেলের লাশ উদ্ধার মহেশপুর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রয়াত শিক্ষকদের স্মরণ  সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত চরফ্যাশনে কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নাজিম উদ্দিন আলম

আমরা যেন কোন চাঁদাবাজ, দখলবাজ ও  টাকা পাচারকারীদের সহযোগী না হই: চরমোনাই পীর

প্রতিনিধিঃ / ৭১ বার পড়া হয়েছে
সময়ঃ শনিবার, ২৬ জুলাই, ২০২৫, ৯:০২ অপরাহ্ন

সৈকত মোঃ সোহাগ,খুলনা অফিস
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, ‘আমরা যেন কোন চাঁদাবাজ, দখলবাজ ও টাকা পাচারকারীদের সহযোগী না হই। আমরা একটি চাঁদাবাজমুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে চাই। পাথর মেরে কিভাবে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে যেটি আইয়্যামে জাহেলিয়াতকেও হার মানিয়েছে, আমরা এ দৃশ্য আর দেখতে চাইনা। ইসলামের জন্য, দেশের কল্যানের জন্য আজ দেশে আওয়াজ উঠেছে। দেশপ্রেমিক ইসলামী শক্তিকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আওয়াজ ওঠার সাথে সাথেই একটি স্বার্থান্বেষী মহল দেশ বিভক্তের দিকে নিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এদেরকে রুখতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ১৫ বছরের পতিত ফ্যাসিবাদের বিষাক্ত ছোঁয়া এখনো দেশকে অনিরাপদ করে রেখেছে। পতিত স্বৈরাচার দেশকে অস্থিতিশীল করে সুযোগ নেয়ার পাঁয়তারা করে যাচ্ছে। তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ দলের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। একই সাথে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সমালোচনায়, বক্তব্যে ও মন্তব্যে শিষ্টাচারের প্রতি লক্ষ রাখতে হবে। কারণ কোন অবস্থাতেই পতিত ফ্যাসিবাদকে কোন সুযোগ করে দেয়া যাবে না।
চরমোনাই পীর জামায়াত নেতাদের মঞ্চে রেখেই খুলনার ছয়টি আসনের হাতপাখার প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন এবং তাদেরকে জনগনের সামনে পরিচয় করিয়ে দেন। এসময় মঞ্চে জামায়াতের পূর্বঘোষিত দাঁড়িপাল্লার প্রার্থীদের মধ্যে চারজনই উপস্থিত ছিলেন।
চরমোনাই পীর শনিবার(২৬ জুলাই) বিকেলে খুলনা মহানগরীর শিববাড়ি মোড়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর ও জেলা শাখা আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করছিলেন।
প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার, গণহত্যার বিচার, সংখানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন, সকল বন্ধ মিল কলকারখানা চালু ও ইসলামী সমাজ ভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর সভাপতি আলহাজ্ব মুফতী আমানুল্লাহ’র সভাপতিত্বে এবং নগর সহ-সভাপতি শেখ মোঃ নাসির উদ্দিন, জেলা সেক্রেটারী হাফেজ আসাদুল্লাহ আল গালিব ও মহানগর সেক্রেটারি মুফতি ইমরান হোসাইনের যৌথ পরিচালনায় গণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল, সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে সংস্কার করে স্থানীয় নির্বাচন দিতে হবে। তিনি বলেন, দুনিয়ার কোন আইনে সমাজে সুবিচার করতে পারে না। প্রয়োজন ইসলামী আইন, কুরআনের আইন। কুরআনের ভিত্তিতেই বৈষম্যহীন সমাজ ও সুবিচার কায়েম হতে পারে। এজন্য সব দলের শাসন আমরা দেখেছি, এখন একটাই দেখতে বাকী সেটি হচ্ছে কুরআনের আইন। আজ দেশ বরেণ্য ওলামায়ে কেরাম, পীর মাশায়েখ সবাই ঐক্যবদ্ধ। আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে ইসলামের পক্ষের আর বিপক্ষের ভোট।
তিনি আরও বলেন, দেশ যখনই একটি ঐক্যবদ্ধ ইসলামী শক্তি এগিয়ে যাচ্ছে তখনই দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। টেলিভিশনে চরমোনাই পীরের বিরুদ্ধে কথা বলছেন কেউ কেউ। চরমোনাই পীরের বিরুদ্ধে কথা বলা  মানে ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলা। সুতরাং সকল ষড়যন্ত্রকে উপেক্ষা করে তিনি একটি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র কায়েমের জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে নিরপেক্ষ করতে হলে পিআর পদ্ধতিতেই নির্বাচন হতে হবে উল্লেখ করে তিনি প্রশ্ন তোলেন কি কারনে গুরুত্বপূর্ণ কমন ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ হতে দেরি করছি ? ফ্যাসিবাদবিরোদী আন্দোলনে যারা ঐক্যবদ্ধ ছিলাম কমন ইস্যুতে সকলকে আবারও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমীর হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেন, চরমোনাই পীরের বিরুদ্ধে যারা মিথ্যা শ্লোগান দেয় তাদের ওপর আল্লাহর গজব নাজিল হবে। যারা চরমোনাই পীরের বিরুদ্ধে নেশাখোর বলে শ্লোগান দেয় তারাই নেশাখোর।
গণসমাবেশে আরও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর মহাসচিব মাওলানা অধ্যক্ষ ইউনুস আহমাদ, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা শোয়াইব হোসেন, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি মোস্তফা কামাল, খুলনা জেলা সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল্লাহ ইমরান।
সমাবেশে খুলনার ছয়টি সংসদীয় আসনের জন্য ইসলামী আন্দোলনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন চরমোনাই পীর। এরা হলেন, খুলনা-১ আলহাজ্ব মাওলানা আবু সাঈদ, খুলনা-২ আলহাজ্ব মুফতি আমান উল্লাহ, খুলনা-৩ আলহাজ্ব হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়াল, খুলনা-৪ হাফেজ মাওলানা অধ্যক্ষ ইউনুস আহমাদ, খুলনা-৫ আলহাজ্ব মুফতি আব্দুস সালাম ও খুলনা-৬ আলহাজ্ব হাফেজ আসাদুল্লাহ গালিব।
সমাবেশ মূলত: বিকেল থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেলা ১১টার মধ্যেই বিপুল পরিমান নেতাকর্মী উপস্থিত হন। বিকেলে কয়েক দফায় বৃষ্টির মধ্যেও সমাবেশ চলমান ছিল। আসরের নামাজের সময় বৃষ্টি হলে আশপাশের মসজিদ থেকে নামাজ আদায় শেষে আবারও রাজপথে বসে যান ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
সমাবেশে ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ছাড়াও জামায়াত, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদসহ অন্যান্য সমমনা রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন ও বক্তৃতা করেন। বক্তৃতা করেন, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের মহানগর সহ-সভাপতি প্রশান্ত কুমার হালদার। সকলের বক্তব্যের সূর ছিল আগামী নির্বাচনে ইসলামী জোটের ভোটবাক্স হবে একটি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটেগরির আরো খবর
Theme Created By AR.Host