বিশ্বব্যাপী লিভার ক্যানসার একটি মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে বিবেচিত। বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু সাধারণ স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুললে এবং ক্ষতিকর অভ্যাস পরিহার করলে লিভার ক্যানসারের ঝুঁকি প্রায় ৬০% পর্যন্ত কমানো সম্ভব।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় উঠে এসেছে, লিভার ক্যানসারের মূল কারণগুলোর মধ্যে হেপাটাইটিস বি ও সি, অতিরিক্ত মদ্যপান, স্থূলতা এবং ফ্যাটি লিভার অন্যতম। এসব কারণ দূর করা সম্ভব হলে আগামীর লাখো মানুষ এ রোগ থেকে রক্ষা পেতে পারে।
অতিরিক্ত অ্যালকোহল লিভারের কোষ নষ্ট করে সিরোসিস ও ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই যত দ্রুত সম্ভব মদ্যপান বন্ধ করা উচিত।
স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজন ‘ফ্যাটি লিভার’ নামক সমস্যার সৃষ্টি করে, যা লিভার ক্যানসারের সম্ভাবনা বাড়ায়। সঠিক ডায়েট ও ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি।
হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে টিকা নেওয়া এবং নিরাপদ জীবনযাপন নিশ্চিত করা উচিত।
ফলমূল, শাকসবজি ও আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া এবং প্রক্রিয়াজাত ও অধিক চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করা লিভারের জন্য উপকারী।
প্রাথমিক পর্যায়ে লিভারের যেকোনো সমস্যা ধরা পড়লে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব। তাই বছরে অন্তত একবার লিভার ফাংশন ও হেপাটাইটিস টেস্ট করানো উচিত।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, বর্তমান হারে যদি ফ্যাটি লিভার ও স্থূলতার প্রবণতা বাড়তে থাকে, তবে ২০৫০ সালের মধ্যে লিভার ক্যানসারের হার ৫৫% পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। তবে এই হার অনেকাংশে কমানো সম্ভব—শুধু সচেতনতার মাধ্যমে।
হংকং ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক স্টিফেন লাম চ্যান বলেন, “লিভার ক্যানসারের প্রতি ৫টি ক্ষেত্রে ৩টিতেই হেপাটাইটিস, স্থূলতা কিংবা অ্যালকোহলের সম্পর্ক থাকে। এ কারণেই এসব ঝুঁকিপূর্ণ অভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করাটা জরুরি।”
একটি সুস্থ লিভার মানেই একটি কর্মক্ষম শরীর। একটু সচেতন হলে ভবিষ্যতের বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব। অভ্যাস বদলান, জীবন বাঁচান।