।শরণখোলা দর্পণ প্রতিবেদন।।
পূর্ব সুন্দরবনে শুটকি মাছ জব্দের তিন দিনের মাথায় এবার বনরক্ষীরা মাছ শুঁটকি করণের রংঘর (মাচা) ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে। সোমবার বিকেলে সুপতি ফরেষ্ট ষ্টেশনের বড় কেচুয়া খালের সুন্দরবনের মধ্যে ষ্মার্ট টীমের বনরক্ষীরা মাছ শুঁটকি করণের রংঘর (মাচা) খুঁজে পায়। অপরদিকে, মাছ শুঁটকি করণের নেপথ্যে সুপতি ষ্টেশন কর্মকর্তার যোগসাজস রয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রকাশ পাচ্ছে।
বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ১২ জুলাই সুন্দরবনের চরাপুটিয়ার ডাবুরখালে দুইটি ট্রলারে ১৮ বস্তা শুঁটকি মাছ জব্দের ঘটনায় বিষয়টি বনবিভাগে আলোড়িত হয়। বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) সুন্দরবনের মধ্যে শুঁটকির রংঘর (মাচা) খুঁজে বের করার জন্য বনরক্ষীদের সাড়াশি অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন। পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের ষ্মার্ট টীম-১ এর টীম লিডার ফরেষ্টার মতিউর রহমানের নেতৃত্বে বনরক্ষীরা হেটে টহল দেওয়ার সময় আজ সোমবার ( ১৪ জুলাই) বিকেলে সুপতি ফরেষ্ট ষ্টেশনের অধীন কেচুয়ার খাল সংলগ্ন সুন্দরবনের মধ্যে মাছ শুঁটকি করার রংঘর (মাচা) খুঁজে পায়। পরে বনরক্ষীরা শুঁটকির মাচা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়।
এক শ্রেণীর অসাধু লোক সুন্দরবনের খালে বিষ দিয়ে চিংড়িসহ অন্য প্রজাতির মাছ ধরে বনের মধ্যে মাচা (জেলেদের ভাষায় রংঘর) বানিয়ে আগুন জ্বালিয়ে মাছ শুকানোর কাজ করে। মাছ শুঁটকি হলে রাতের আধারে ট্রলার বোঝাই করে মোংলা ,খুলনাসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যায়। এর সাথে কতিপয় বনরক্ষীর যোগসাজস রয়েছে বলে বনসংশ্লিষ্টদের অভিযোগে জানা যায়।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়,সুপতি ষ্টেশন কর্মকর্তা ফরেষ্টার জাহাঙ্গীর আলম দুর্ণীতির আশ্রয় নিয়ে শুঁটকির সাথে জড়িত জেলেদের মাছ শুঁটকি করার সুযোগ করে দিচ্ছে। শুধু তাই নয় ফরেষ্টার জাহাঙ্গীর আলম কচিখালী অভয়ারণ্য কেন্দ্রে গত বছর দায়িত্ব পালন কালে কচিখালী বনাঞ্চল থেকে ব্যপকহারে হরিণ পাচার হয়ে যায়। বরগুনার পাথরঘাটায় জাহাঙ্গীর আলমের বাসা থাকায় সেখান তার হরিণ শিকারীদের সাথে সখ্যতা গড়ে ওঠে বলে নির্ভরযোগ্য ঐ সূত্র জানায়। গোপন তদন্ত হলে এর সত্যতা মিলবে বলে সূত্রটি নিশ্চিত করেছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক “সুজন “এর শরণখোলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার রুহুল আমিন বলেন, সুন্দরবনের মধ্যে আগুন জ্বালিয়ে মাছ শুটকি করনের খবরে আমরা উদ্বিগ্ন। এতে বনের পরিবেশ ধ্বংস হবে। বনবিভাগের কেউ জড়িত না থাকলে কোন অবস্থায় বনের মধ্যে মাছ শুটকি করার কাজ কেউ করতে পারে না বলে আমরা মনে করি। এ বিষয়ে তদন্ত হওয়া দরকার।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোঃ রেজাউল করীম চৌধুরী “শরণখোলা দর্পণ”কে বলেন,আজ সোমবার বিকেলে স্মার্ট টীমের সদস্যরা সুপতি এলাকায় শুঁটকির মাচা খুঁজে পেয়ে তা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে।