তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। গত শনিবার দিবাগত রাত ৮টায় এ ঘটনা ঘটে। তবে বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনা চলে সারারাত। উত্তাপ্ত পরিস্থিতির কারণে আজ রোববার সকল ডিসিপ্লিণের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ ঘোষনা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ঘটনাটি তদন্তে ৪ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ।
প্রত্যক্ষদর্শী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, গতকাল শনিবার বিকালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মীর মুগ্ধ আন্তঃডিসিপ্লিন ফুটবল টুর্নামেন্টের খেলার আয়োজন করা হয়। খেলার একপর্যায়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এবং আইন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। তবে উভয় পক্ষের সমঝোতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এ ঘটনার পর রাত ৮টার দিকে বাইক চালানোকে কেন্দ্র শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফের উত্তেজনা তৈরি হয়। আইন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মারুফ বিল্লার পাশ দিয়ে মহিউদ্দিন লিমন নামের এক শিক্ষার্থী জোরে মোটরসাইকেল চালিয়ে যায়। তখন মারুফ মোটরসাইকেল আস্তে চালাতে বললে লিমন উত্তেজিত হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে শুরু হয় কথা কাটাকাটি। কিন্তু পরে তা হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যায়। এরপর আইন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে মহিউদ্দিন লিমনের ওপর চড়াও হয়ে আক্রমণ করে। ঘটনাটি দ্রুত সময়ে ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে দুই পক্ষের মধ্যে শুরু হয় তুমুল মারামারি। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। আহতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক নাজমুস সাদাতের হস্তক্ষেপে রাত ১২টার দিকে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু রাত ১টার দিকে দুই গ্রুপ দুটি মিছিল বের করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এসে জড়ো হয়। এ সময়ে একপক্ষ অপরপক্ষকে ভূয়া ভূয়া বলেও স্লোগান দেয়। তখন উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম পরিস্থিতি শান্ত করতে তাদের সঙ্গে কথা বলেন।
এসময়ে ছাত্র বিষয়ক পরিচালক নাজমুস সাদাত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় একটি শান্তিপূর্ণ ক্যাম্পাস। যে ঘটনাটি ঘটেছে তা অত্যন্ত অনাকাঙ্খিত। ঘটনার সাথে জড়িতদের তদন্ত করে বিচারের আওতায় আনা হবে।
এছাড়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে উপাচার্য আজ রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রাখার ঘোষণাও করেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক নাজমুস সাদাত বলেন, ক্যাম্পাস এখন শান্ত রয়েছে। ঘটনাটি তদন্তে ৪ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ১৪ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবে।