জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে শহীদদের আত্মত্যাগকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে কিছু দল নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিকেলে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত এক দোয়া ও মৌন মিছিলপূর্ব সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সমাবেশে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমার ভাইয়েরা যারা শহীদ হয়েছেন, তারা যদি আজ থাকতেন বা দেখতে পেতেন যে তাদের মৃত্যু নিয়ে আজ রাজনৈতিক ব্যবসা চলছে, তাহলে তারা কখনো ক্ষমা করতেন না।’
তিনি জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও ইসলামী আন্দোলনের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘বিশেষ কিছু দল শহীদদের বিক্রি করে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠা পেতে চাচ্ছে। কেউ কেউ মিথ্যা সততার মুখোশ পরে রাজনৈতিক সুবিধা নিচ্ছে।’
সরকারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ তুলে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘দেশের একটি দলকে কোলে তুলে রাখা হয়েছে, আরেকটি দলকে কাঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এভাবে চলতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই অবিলম্বে একটি নির্বাচন দেওয়া হোক। তাহলে দেশের অস্থিরতা কমবে। আর নির্বাচন না দিলে জনগণ বুঝে নেবে এই অশান্তির জন্য দায়ী সরকার নিজেই।’
একজন ধর্মীয় নেতার নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘একসময় যিনি বলেছিলেন জামায়াতের ছোঁয়া লাগলে জায়গা পচে যাবে, তিনিই আজ জামায়াতের কোলে বসে আছেন।’
বিএনপিকে ‘আওয়ামী লীগের মতো’ বানানোর চেষ্টার বিরোধিতা করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতার জন্য পাগল নয়। দলটি গত ১৭ বছর ধরে মানুষের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলন করে আসছে। বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা ব্যর্থ হবে।’
সমাবেশে আরও জানানো হয়, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে বিএনপি ও ছাত্রদলের ৪২২ জন কর্মী শহীদ হয়েছেন। শহীদদের উদ্দেশে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘তারা কোনো একক ব্যক্তি বা দলের অনুসারী ছিলেন না। তারা চেয়েছিলেন একটি ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ, যেখানে গণতন্ত্র থাকবে, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা পাবে।’
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ। মিছিলটি নয়াপল্টন থেকে কাকরাইল, শান্তিনগর, মালিবাগ হয়ে মালিবাগ আবুল হোটেলের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
দর্পণ/এমএ