পূর্ব সুন্দরবনে আটক ঝুড়ি ভরা কাকড়া।
দর্পণ প্রতিবেদন:
পূর্ব সুন্দরবনে প্রবেশে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে থেমে থাকেনি অবৈধভাবে মাছধরা ও হরিণ শিকার। গত তিন মাসে বনরক্ষীরা সুন্দরবন থেকে জব্দ করেছে হরিণের মাংস, বিপুল পরিমাণ হরিণ ধরা ফাদ ও বিষযুক্ত চিংড়ি মাছ। গ্রেফতার হয়েছে ১৪৮ জন। ১ জুন থেকে ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে মাছ ধরা ও প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলো সুন্দরবন বিভাগ।
বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, মাছ ও বণ্যপ্রাণীর প্রজনন বৃদ্ধির জন্য গত ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত টানা তিন মাস সুন্দরবনে পর্যটক ও জেলেদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারী করে সুন্দরবন বিভাগ। এক শ্রেণীর জেলে ও হরিণ শিকারী চক্র তাদের অপতৎপরতা বন্ধ করেনি। নিষেধাজ্ঞার মধ্যে বনরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা সুন্দরবনের নদীতে অবৈধভাবে মাছ ও কাকড়া ধরা ও হরিণ শিকারের ফাঁদ পাতায় লিপ্ত হয়। বনরক্ষীদের কঠোর নজরদারী ও সাড়াশি অভিযানে বন অপরাধে তিনমাসে সুন্দরবন থেকে ১৪৮ জন আটক হয়। আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাদেরকে বাগেরহাট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জে হরিণের মাংসসহ আটক দুই শিকারী
বন বিভাগের তথ্যানুযায়ী, গত তিন মাসে বনরক্ষীদের অভিযানে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জের বনাঞ্চল থেকে উদ্ধার হয়েছে ৫০ কেজি হরিণের মাংস, ৫৭৫ কেজি বিষযুক্ত চিংড়ি মাছ, ৫৮ বোতল কীটনাশক, ৩৭৫ কেজি কাঁকড়া, ২২ বস্তা শুঁটকি মাছ, ২৪,৬৬৮ ফুট হরিণ ধরা মালা ফাঁদ, ১৩০টি ছিটকা ফাঁদ, ৬০৫টি (৯০০ ফুট) হাঁটা ফাঁদ, ২৪২টি ট্রলার ও নৌকা, ৩,০৭৩টি কাঁকড়া ধরার চারু এবং ১৩,৭৪৯ ফুট মাছ ধরার অবৈধ জাল।
পূর্ব সুন্দরবন বন বিভাগ বাগেরহাটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, সুন্দরবনে অপরাধ প্রবনতা অনেকাংশে কমানো গেছে। গত তিন মাসে বনরক্ষীরা সুন্দরবনে অভিযান চালিয়ে অনেক হরিণ রক্ষা করতে পেরেছে। উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমাণ হরিণ ধরা ফাঁদ। ১৪৮ জন অপরাধীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সুন্দরবন ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় বনবিভাগ জিরো টল্যারেন্স নীতিতে কাজ করছে। সুন্দরবনকে বাঁচাতে হলে স্থানীয় জনগণের সহযোগিতা জরুরি। আমরা শুধু আইন প্রয়োগ নয়, সচেতনতা বাড়াতেও কাজ করছি, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুন্দরবনকে টিকিয়ে রাখা যায় বলে ডিএফও জানান।##