বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:১৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
খুলনায় মৃত ৬জন সরকারি কর্মচারীর পরিবারকে ৪০ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর মোল্লাহাটে মহাসড়কে যুবককে গুলি শরণখোলায় বিপুল উৎসাহ ও আনন্দমূখর পরিবেশে পালিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গা উৎসব এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ও চিকিৎসাভাতা নিয়ে সুখবর ২২ মাসের বকেয়া বেতন ভাতা প্রদানের দাবিতে খুলনায় কর্মকর্তা কর্মচারীদের মানববন্ধন  গণভোট’ই সমস্যার সমাধান হতে পারে:-শেখ মোস্তাফিজুর রহমান খুলনায় ঘুমন্ত অবস্থায় যুবককে গুলি করে হত্যা পূর্ব সুন্দরবনের করমজলে কুমিরের আক্রমণে নিহত জেলের লাশ উদ্ধার মহেশপুর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রয়াত শিক্ষকদের স্মরণ  সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত চরফ্যাশনে কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নাজিম উদ্দিন আলম

খুলনার মন্ডপ গুলোতে প্রতিমা নির্মাণে ব্যস্ত কারিগররা

খুলনা অফিস / ৫৬ বার পড়া হয়েছে
সময়ঃ বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১০:৪২ পূর্বাহ্ন

# জেলা ও নগরীতে ৯৭৭টি পূজা মন্ডপ প্রস্তুত
# গতবারের তুলনায় বেড়েছে ১০৫টি মন্ডপ
# আইন-শৃংখলা বাহিনীর নিরাপত্তা গ্রহণ
# কেনাকাটায় মার্কেটগুলোতে ভীড় বেড়েছে
সৈকত মোঃ সোহাগ খুলনা অফিস:
খুলনায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় আয়োজন শারদীয় দুর্গোৎসবকে ঘিরে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি।  গত বছরের তুলনায় এবছর পূজার মন্ডপ বেড়েছে ১০৫টি। খুলনা মহানগর ও জেলার গ্রামে গ্রামের মণ্ডপে চলছে প্রতিমা নির্মাণ তৈরীর কাজ। চলছে স্টেজ নির্মাণ, নানা রঙের কাজ ও আলোকসজ্জার ব্যস্ততা। শিল্পীরা দিন রাত পরিশ্রম করে তুলছেন দেবী দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ ও মহিষাসুরের প্রতিমা। এদিকে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে দুর্গাপূজার প্রতিমা বানানোকালীন  এবং চলাকালীন ও প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ব বৃহৎ এ উৎসব পালনে নগরীর মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের ভীড় পরিলক্ষিত হচ্ছে।
সূত্র জানায়, আগামী ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মাধ্যমে দেবীর আগমনী বার্তা ছড়িয়ে পড়বে। আর ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে পাঁচ দিনের পূজার আনুষ্ঠানিকতা। এ উপলক্ষে খুলনার সোনাপট্টি মন্দিরে ভারতের তামিল মন্দিরের আদলে বিশাল মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে। ঐতিহ্যবাহী বাজার কালীবাড়ী মন্দিরেও ভারতীয় মন্দিরের অনুকরণে বিশেষ প্যান্ডেল নির্মাণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি আর্য্য ধর্মসভা মন্দির, শীতলাবাড়ী মন্দির, শিববাড়ী মন্দির, দোলখোলা ও দৌলতপুরসহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে অনন্য রূপে সাজানো হচ্ছে মণ্ডপগুলো।
খুলনা জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের তালিকা অনুযায়ী এবছর খুলনা মহানগরে ১২০টি এবং জেলায় ৮৫৭টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। সবমিলে খুলনায় মোট ৯৭৭টি পূজা হবে। গত বছরের তুলনায় এবছর পূজা বেড়েছে ১০৫টি। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ২০২৩ সালে খুলনায় সর্বাধিক ৯৯৩টি দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তবে সরকার পরিবর্তনের পর গত বছর জেলায় পূজা কমে দাঁড়ায় ৮৭২টিতে। এবছর আবারও সেই সংখ্যাটি বাড়লো।
সূত্র জানায়, মহানগরের মধ্যে সদর থানায় ২৪টি, সোনাডাঙ্গায় ১১টি, খালিশপুরে ৭টি, দৌলতপুরে ২৪টি, খানজাহান আলীতে ৮টি, হরিনটানায় ৫টি, লবনচোরায় ৯টি এবং আড়ংঘাটায় ৩২টি মণ্ডপে পূজা হবে। আর জেলায় ডুমুরিয়ায় ২১৪টি, পাইকগাছায় ১৪১টি, বটিয়াঘাটায় ১০৫টি, তেরখাদায় ৯৮টি, রূপসায় ৭৫টি, দাকোপে ৭৪টি, দিঘলিয়ায় ৬১টি, কয়রায় ৫৫টি ও ফুলতলায় ৩৪টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার খরসংগ এলাকায় জেলার সবথেকে বড় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এখানে সব থেকে বেশি ২০২টি প্রতিমা নির্মাণের কাজ চলমান।
এই পূজা উদযাপন কমিটির কোষাধ্যক্ষ সুব্রত সরকার বলেন, ‘শারদীয় দুর্গোৎসব আমাদের কর্মসংস্থানের বড় উৎস। গত বছরের মতো এ বছরও খুলনা বিভাগের সবথেকে বড় আকারে উৎসবের আয়োজন হবে আমাদের এখানে। এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে।’
শিল্পীদের এই ব্যস্ততার মধ্যেই মণ্ডপে ভিড় জমতে শুরু করেছে দর্শনার্থীদের। অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরে আসছেন প্রতিমার কাজ কেমন হচ্ছে দেখতে। শিশু-কিশোরদের মধ্যে উৎসবের আমেজ আরও বেশি। শহরের অলিগলিতে আলোকসজ্জার প্রস্তুতি দেখা যাচ্ছে, দোকানপাটেও জমে উঠছে উৎসবের কেনাকাটা।
পূজা উদযাপনকে নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি মন্ডপে নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করার পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের ত্রাণ বিভাগ থেকে প্রতিটি মণ্ডপে ৫০০ কেজি করে চাল অনুদান দেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ টহল থাকবে মন্ডপ এলাকায়।
খুলনার সাধারণ মানুষও পূজাকে ঘিরে উৎসবের আমেজে মেতে উঠেছেন। ভক্তদের পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মের মানুষও প্রতিমা দর্শনে আসেন, এতে তৈরি হয় সম্প্রীতির পরিবেশ। নগরীর সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোও পূজার অনুষ্ঠানকে ঘিরে নানা আয়োজন করছে।
শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, দুর্গোৎসব এখন হয়ে উঠেছে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক মিলনমেলা। নগরী ও জেলায় উৎসবকে ঘিরে তৈরি হচ্ছে এক ভিন্ন আবহ। আজ মঙ্গলবার খুলনার বিভিন্ন মাকের্ট ঘুরে দেখা গেছে উপচে পড়া ভীড়। দোকানীরা জানান, পোশাক বিক্রি বেড়েছে।
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে কেএমপির মতবিনিময়
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে কেএমপি সদর দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে দুর্গাপূজা উপলক্ষে নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পূজা উদযাপন পরিষদ এবং হিন্দু বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান  কল্যান ফ্রন্টের নেতৃবৃন্দদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এ্যাডমিন এন্ড ফিন্যান্স) আবু রায়হান মুহাম্মদ সালেহ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত
সভায় তিনি বলেন, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে দুর্গাপূজার প্রতিমা বানানোকালীন  এবং চলাকালীন ও প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি প্রতিটা পূজা মন্ডপে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক দ্বারা সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পূজা উদযাপন পরিষদ নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানান। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ নির্বিঘ্নে পূজা উৎযাপন করতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে। যে কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনার সংবাদ তাৎক্ষণিকভাবে কেএমপি কন্ট্রোল রুম, জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে অথবা সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জকে জানাতে অনুরোধ করেন। দুর্গোৎসব গুরুত্ব দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ সবোর্চ্চ পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করবে।
সভায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) জনাব মোহাম্মদ রাশিদুল ইসলাম খান, খুলনা মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্যামল হালদার; সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কুমার কুন্ডু, খুলনা মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান কল্যান ফ্রন্টের সভাপতি  সুজনা জলি সহ বিভিন্ন থানা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ও সেক্রেটারীগণ এবং খুলনা মহানগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটেগরির আরো খবর
Theme Created By AR.Host