ছবির ক্যাপশনঃ
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের বগী ফরেষ্ট ষ্টেশন অফিসকাম ব্যারাক ভবন নদীতে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে।##
শরণখোলা দর্পণ প্রতিবেদনঃ
নদীতে ভাঙ্গছে সুন্দরবন। কমছে বনভূমি। বনের বিভিন্ন স্থানে বিলীন হয়েছে বন বিভাগের জেটি ও স্থাপনা। অফিস ব্যারাক ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন বনরক্ষীরা । বনের ৯ টি স্থানের ভাঙ্গন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তা চেয়েছে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ।
বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, বেশ কয়েক বছর ধরে সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ব্যপক জায়গা জুড়ে গাছপালাসহ বনভূমি নদীতে বিলীন হ্েচ্ছ। বিশেষ করে দুবলা ফরেষ্ট অফিসের জেটি, খাবার পানির একাধিক পুকুর, অফিস ভবন, মেহেরআলী চরের সাইক্লোন শেল্টার ও মিস্টি পানির পুকুর সাগরে বিলীন হয়েছে। সাগরে বিলীন হয়েছে কটকার পুরাতন রেষ্ট হাউস ভবনও জেটি বগী ফরেষ্ট অফিসের দোতলা ভবন নদীতে বিলীন হওয়া এখন সময়ের ব্যপার মাত্র। অনেক স্থানের অফিস ও পুকুর নদীতে বিলীন হবার পথে। সুন্দরবনের ৯টি স্থানের, পুকর, জেটি. গোলঘর, টিকিট কাউন্টার, ট্যুরিষ্ট বসার স্থান ও ষ্টাফ ব্যরাকের ভাঙ্গন ঠেকাতে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ বাগেরহাট থেকে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলীকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। ভাঙ্গন কবলিত ৯ টি স্থান হচ্ছে, কচিখালী অভয়ারণ্য কেন্দ্র, কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্র, চান্দেশ্বর টহল ফাঁড়ি, জেলে পল্লী দুবলা টহল ফাঁড়ি, বগী ফরেষ্ট ষ্টেশন, ঝাপসি টহল ফাঁড়ি, জোংড়া টহল ফাঁড়ি , করমজল বণ্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র ও শুয়ারমারা টহল ফাঁড়ি।
সুন্দরবনের প্রধান পর্যটন স্পট কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরেষ্টার আব্দুস সবুর বলেন, সাগরের ভাঙ্গনে কটকার বিস্তীর্ন বনাঞ্চল সাগরে বিলীন হচ্ছে। ক্রমাগত বনভূমি ভাঙ্গছে। কমছে বনভূমি। অনেক গাছপালা সাগরে বিলীন হয়েছে। কটকার পুরাতন রেষ্টহাউস ভবন সাগরে চলে গেছে। তাছাড়া সুন্দরবনের গহীনে অনেক জায়গা নদী খালে বিলীন হয়েছে। কটকার ফরেষ্ট অফিস এখন ভাঙ্গনের মুখে বলে ঐ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান।
বগী ফরেষ্ট ষ্টেশন কর্মকর্তা ফরেষ্টার দিলীপ মজুমদার বলেন, তাদের অফিসকাম ব্যারাক নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়া এখন সময়ের ব্যপার মাত্র। ঝুঁকি এড়াতে তারা ভবন ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। বগী ফরেষ্ট অফিসের ভাঙ্গন ঠেকাতে গত সেপ্টেম্বর অক্টোবর মাসে পানি উন্নয়ন বোর্ড নদীতে বালির বস্তা ফেলে ডাম্পিং করেছিলো। তাতে নদী ভাঙ্গন ফেরেনি।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) রানা দেব বলেন, সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থানের বনভূমি যেমন নদীতে ভাঙ্গছে তেমনি আবার অনেক জায়গায় নদীতে চর জেগে উঠেছে। নদী ভাঙ্গনের ফলে বনবিভাগের ব্যপক ক্ষতি হচ্ছে। ঘূর্ণীঝড় রেমালের পরে ভাঙ্গন আরো তীব্র আকার ধারণ করেছে বলে এসিএফ জানান।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোঃ আল বিরুনি বলেন, সুন্দরবন বিভাগের আবেদনের প্রেক্ষিতে বগী ফরেষ্ট ষ্টেশন অফিসের সামনে ভাঙ্গন ফেরাতে বালি ভর্তি জিও ব্যাগ নদীতে ফেলা হয়েছে। বাজেট সল্পতার কারণে সুন্দরবনের অন্যান্য স্থানে ভাঙ্গন প্রতিরোধে কাজ করা সম্ভব হয়নি।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগ বাগেরহাটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ( ডিএফও) মোঃ রেজাউল করীম চৌধুরী “শরণখোলা দর্পণ”কে বলেন, সুন্দরবনে ব্যপকভাবে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। বনের বিভিন্ন জায়গায় অনেক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড বগীতে ভাঙ্গন কবলিত স্থানে বালিভর্তি জিওব্যাগ নদীতে ফেলে কিছু কাজ করেছে। কিন্ত ভাঙ্গন প্রতিরোধে আরো বড় ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করা দরকার বলে ডিএফও জানিয়েছেন।#
দর্পণ/এমএ