বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৩৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
খুলনায় মৃত ৬জন সরকারি কর্মচারীর পরিবারকে ৪০ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর মোল্লাহাটে মহাসড়কে যুবককে গুলি শরণখোলায় বিপুল উৎসাহ ও আনন্দমূখর পরিবেশে পালিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গা উৎসব এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ও চিকিৎসাভাতা নিয়ে সুখবর ২২ মাসের বকেয়া বেতন ভাতা প্রদানের দাবিতে খুলনায় কর্মকর্তা কর্মচারীদের মানববন্ধন  গণভোট’ই সমস্যার সমাধান হতে পারে:-শেখ মোস্তাফিজুর রহমান খুলনায় ঘুমন্ত অবস্থায় যুবককে গুলি করে হত্যা পূর্ব সুন্দরবনের করমজলে কুমিরের আক্রমণে নিহত জেলের লাশ উদ্ধার মহেশপুর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রয়াত শিক্ষকদের স্মরণ  সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত চরফ্যাশনে কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নাজিম উদ্দিন আলম

ভবিষ্যতে কেউ নাগরিকদের অধিকার কেড়ে নিতে চাইলে পরিণতি শেখ হাসিনার মতো হবে:জোনায়েদ সাকি

খুলনা অফিস / ৯৫ বার পড়া হয়েছে
সময়ঃ সোমবার, ২৮ জুলাই, ২০২৫, ১০:৩০ অপরাহ্ন

সৈকত মোঃ সোহাগ, খুলনা অফিস:
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, আমাদের সংবিধানে ক্ষমতার কোনো ভারসাম্য নাই। সব ক্ষমতা কেবল একজন ব্যক্তির হাতে কেন্দ্রীভূত। যে-ই প্রধানমন্ত্রী হোক, পুরো রাষ্ট্র তার পকেটে। এইরকম ক্ষমতা আছে বলেই তারা আমাদের ওপর ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে পেরেছে। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশে আর কেউ যদি আমাদের দেশের নাগরিকদের অধিকার কেড়ে নিতে চায়, তার পরিণতি শেখ হাসিনার মতো হবে। দেশ ছেড়ে পালাতে হবে।
সোমবার (২৮ জুলাই) বিকালে খুলনা মহানগরীর  শিববাড়ী মোড়ে জুলাই পদযাত্রা ও সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন তিনি।
জোনায়েদ সাকি বলেন, নির্বাচন দিলে হেরে যাবে এই ভয়ে তারা পুরো ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে চেয়েছিল। কেন একজন ব্যক্তি চাইলেই ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে পারে? কেউ একজন চাইল আর ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখল বছরের পর বছর, একটার পর একটা তামাশার নির্বাচন করে সে টিকে গেল! এর কারণ, সে পুরো রাষ্ট্রব্যবস্থাটাকে পকেটে ঢুকিয়ে ফেলেছিল। আমাদের দেশে যতগুলো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান আছে- পুলিশ, প্রশাসন, আইন-কানুন, সংবিধান, সেনাবাহিনী- সবকিছু পকেটে ঢুকিয়ে ফেলেছিল। এভাবে পকেটে ঢুকিয়ে, জনগণের ওপর স্টিমরোলার চালিয়ে, ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল তারা।
তিনি বলেন, আমাদের আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতন ঘটাতে হবে, একইসাথে রাষ্ট্রকে যে পকেটে ঢুকিয়ে ফেলা যায়- সেটা বাতিল করতে হবে। আর কেউ যাতে বাংলাদেশে রাষ্ট্রব্যবস্থা ও রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানসমূহকে পকেটে ঢুকিয়ে ফেলতে না পারে। আমরা সেই কারণে লড়াই করেছি।
জোনায়েদ সাকি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বিচার শুরু করেছে। এখনও পর্যন্ত শহীদের তালিকাটাই ঠিক হয়নি। শহীদ পরিবার হাহাকার করছেন, তাদের দায়িত্ব রাষ্ট্র ঠিকমতো নিতে পারে নাই। শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ঠিকমতো দিতে পারে নাই। ৫ আগস্ট এসে যাচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনার সরকার এক বছরের মধ্যে শহীদের তালিকা তৈরি করতে পারল না, তাদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিতে এবং পরিবারের দায়িত্ব নিতে পারল না, আহতরা এখনও চিকিৎসার জন্য ক্ষোভ ঝাড়ে, তাদের পরিবার কীভাবে চলবে সেই দায়িত্ব আপনারা নিতে পারলেন না। কাজের তালিকায় আগে অগ্রাধিকার ঠিক করুন। অভ্যুত্থানের ওপর দাঁড়িয়ে আছেন, অভ্যুত্থান যা চায়, সেটা দিতে হবে। এবং সেই কাজই সম্পন্ন করা আপনাদের দায়িত্ব। আজীবন আপনারা ক্ষমতায় থাকবেন না। প্রতিটি শহীদ পরিবার যাতে এই সন্তুষ্টিতে থাকে যে অন্তত  বিচার শুরু হয়েছে। প্রয়োজনে ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়ান।
জোনায়েদ সাকি বলেন, বাংলাদেশ আর ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থায় ফিরবে না। যে সংস্কার ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিত করে, জনপ্রতিনিধিদের জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য করে- সে সংস্কার অবশ্যই করতে হবে।
জোনায়েদ সাকি বলেন, লুটপাট ও দুর্নীতি করে আমাদের দেশের গর্ব পাটকলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তার জন্য কি শ্রমিকরা দায়ী? সমস্ত আমলা আর দুর্নীতিবাজ পরিচালকরা মিলগুলোকে লুটপাট করে ফোকলা বানিয়ে দিয়েছিল। শেখ হাসিনা যেমন রাতের আঁধারে চুরি করে, তেমনি করোনার সময় এই কারখানাগুলো বন্ধ করে দিল। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত আপনারা এখনও বাতিল করতে পারেন নাই। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে বলেছিলাম, অন্তত একটা মিল ভালো করে চালু করেন, একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যান। যদি শ্রমিক, কৃষকের স্বার্থ না দেখা হয়, যদি শ্রমজীবী, কর্মচারি, নিম্মবিত্ত মানুষের শিক্ষা-স্বাস্থ্য, ন্যূনতম মজুরি, কর্মসংস্থান না হয়- তাহলে সেই গণতন্ত্রে আবারও কতিপয় লোক সমস্ত সম্পদ কেন্দ্রীভূত করবে। আর কতিপয়ের হাতে যখন সমস্ত সম্পদ থাকে, তখন সেটা স্বৈরতন্ত্র আর ফ্যাসিবাদ হওয়া থেকে আর ঠেকানো যায় না। সম্পদের যদি সুষম ও ন্যায্য বণ্টন না হয়, তাহলে কোনো রাষ্ট্র স্বৈরাচার আর একচেটিয়া কর্তৃত্ব থেকে মুক্ত হতে পারে না।
গণসংহতি আন্দোলন রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য কৃষক নেতা দেওয়ান আব্দুর রশীদ নীলু বলেন, সরকারের তিনটা দায়িত্ব। বিচার, সংস্কার, নির্বাচন। এই তিন দায়িত্ব পালনের কোনো অগ্রগতি আমরা লক্ষ্য করছি না। কিন্তু বিচার এবং সংস্কারকে নির্বাচনের মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা চলছে যেন নির্বাচনকে পিছিয়ে দেয়া যায়। এই তিনটা কাজ ঠিকমতো করাই নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। এটা শুধু রাজনৈতিক বন্দোবস্ত না, এট শ্রমিক, কৃষক, মেহনতি মানুষসহ সারা দেশের সকল মানুষের মুক্তির বন্দোবস্ত।
দলের খালিশপুর থানার  আহবায়ক মোশাররফ হোসেন বলেন, দিনের ভোট যাতে রাতে না হয় সেই লক্ষ্যে সংবিধান সংস্কার করতে হবে যেন নতুন করে স্বৈরাচার দানা বাঁধতে না পারে।
সমাবেশের আগে “বন্ধকৃত ২৬টি পাটকল-নিউজপ্রিন্ট-হার্ডবোর্ড মিলসহ খুলনার সকল শিল্পকারখানা চালু করতে হবে” এই দাবি নিয়ে পদযাত্রায় অংশ নেন দলের নেতাকর্মীরা। পদযাত্রাটি খুলনার খালিশপুর থেকে শিববাড়ী পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়।
গণসংহতি আন্দোলন খুলনা জেলার সভাপতি মুনীর চৌধুরী সোহেলের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পরিষদের সদস্য মো অলিয়ার রহমান শেখ, জেএসডির খুলনা মহানগরের সভাপতি খান লোকমান হাকিম, ভাসানী অনুসারী পরিষদ খুলনা মহানগরের সভাপতি শেখ আবদুল হালিম, গণসংহতি আন্দোলন অভয়নগর উপজেলার সদস্য সচিব সামস সারফিন সামন, খালিশপুর দৌলতপুর জুটমিল যৌথ কারখানা কমিটির নেতা মনির হোসেন মনি, প্লাটিনাম জুটমিলের শ্রমিকনেতা নূরুল ইসলাম, দৌলতপুর জুটমিল কারখানা কমিটির সভাপতি নূর মোহাম্মদ, হার্ডবোর্ড মিলের শ্রমিক নেতা মো জহিরুল ইসলাম জব্বার প্রমুখ।
সৈকত মোঃ সোহাগ খুলনা


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটেগরির আরো খবর
Theme Created By AR.Host