বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:০১ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
খুলনায় মৃত ৬জন সরকারি কর্মচারীর পরিবারকে ৪০ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর মোল্লাহাটে মহাসড়কে যুবককে গুলি শরণখোলায় বিপুল উৎসাহ ও আনন্দমূখর পরিবেশে পালিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গা উৎসব এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ও চিকিৎসাভাতা নিয়ে সুখবর ২২ মাসের বকেয়া বেতন ভাতা প্রদানের দাবিতে খুলনায় কর্মকর্তা কর্মচারীদের মানববন্ধন  গণভোট’ই সমস্যার সমাধান হতে পারে:-শেখ মোস্তাফিজুর রহমান খুলনায় ঘুমন্ত অবস্থায় যুবককে গুলি করে হত্যা পূর্ব সুন্দরবনের করমজলে কুমিরের আক্রমণে নিহত জেলের লাশ উদ্ধার মহেশপুর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রয়াত শিক্ষকদের স্মরণ  সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত চরফ্যাশনে কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নাজিম উদ্দিন আলম

টাকার অভাবে হচ্ছে না চিকিৎসা : গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়েও জীবনযুদ্ধে হারতে বসেছে শরণখোলার সিয়াম

ষ্টাফ রিপোর্টার / ২১৫ বার পড়া হয়েছে
সময়ঃ বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫, ৩:৫৫ অপরাহ্ন

ক্যাপশন: মা- বাবার সাথে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পাওয়া অসুস্থ সিয়াম আহমেদ।

 

মহিদুল ইসলাম,
হতদরিদ্র পরিবারের মেধামী সন্তান সিয়াম আহমেদ। এবার এসএসসিতে পেয়েছে গোল্ডেন জিপিএ ৫। সংসারের
অভাব অনটন আর শত প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করলেও জীবনযুদ্ধে হারতে
বসেছে সে।
ভবিষ্যতে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন সিয়ামের। কিন্তু তার সেই স্বপ্ন আজ জীবন-মৃত্যুর দোটানায় পড়ে আছে।
কারণ মেধাবী এই ছেলেটি এখন খুবই অসুস্থ। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে বড় ধরণের অস্ত্রপচার
(অপারেশন) হয়েছে তার মাথায়। স্বাভাবিভাবে এখন চলতেও পারছে না সে।
এদিকে সন্তানের এমন অভাবনীয় সফলতার পরেও পরিবার ও মা-বাবার মনে নেই কোনো আনন্দ-উচ্ছ্বাস।
ভবিষ্যতে ছেলে ডাক্তার হবে। দরিদ্র মা-বাবা সেই আশায় বুক বেধে আছেন। কিন্তু সেই ছেলে আজ পড়ে আছে
বিছানায়। সঠিক সময় চিকিৎসা করাতে না পারলে অনিশ্চিত হয়ে পড়বে অসম্ভব মেধাবী ছেলেটির ভবিষ্যৎ।
পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পরীক্ষা শেষে হওয়ার মাসখানেক পর গত ৯ জুন সকালে সিয়াম হঠাৎ
মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করে। কিছুক্ষণের মধ্যে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। বাড়ি থেকে ১০-১২ কিলোমিটার
দূরের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা দ্রুত খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে
যাওয়ার পরামর্শ দেন। সেখানে নেওয়ার পর এলাকার পরিচিত নিউরো সার্জন ডা. রিয়াজ আহমেদের
সহযোগিতায় খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিউরো সার্জন কমলেশ সাহার মাধ্যমে অপারেশন
করানো হয়।
প্রথমবার অপারেশনে খরচ হয়েছে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা। ধারদেনা করে এতো টাকা খরচ করেছে পরিবার। সামনে
আরো একটি অপারেশন করাতে হবে। সেখানে আরো তিন থেকে চার লাখ টাকার প্রয়োজন। কিন্তু এতো টাকা
কোনোভাবেই জোগাড় করা সম্ভব না পরিবারের পক্ষে। সময় মতো সঠিক চিকিৎসা করাতে না পারলে পঙ্গুত্ব
বরণ করতে হবে তাকে, এমনটাই বলেছেন চিকিৎসক। অপূর্ণ রয়ে যাবে ভবিষ্যতে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন।
সন্তানের এমন পরিস্থতি এবং  টাকার অভাবে চিকিৎসা অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় দরিদ্র পরিবারে নেমে এসেছে
বিষাদের অন্ধকার।
শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া গ্রামের মো. দুলাল মিয়া ও রুনু বেগম
দম্পতির দুই ছেলের মধ্যে সিয়াম আহমেদ বড়। সে স্থানীয় সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি
পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে এলাকাবাসীকে।
সিয়ামের বাবা দুলাল মিয়া স্থানীয় সাব-পোস্ট অফিসে মাত্র চার হাজার টাকা বেতনে ডাক পিয়নের কাজ করেন।
এই সামান্য টাকায় টেনেটুনে চলে চার সদস্যের পরিবার। বসতবাড়ির চার কাঠা জমি ছাড়া আর কোনো সম্পত্তি
নেই তার। দুলাল মিয়া নিজেও হার্টের রোগী। ভারি কোনো কাজ করতে পারেন না।
আক্ষেপ ও হতাশা প্রকাশ করে দুলাল মিয়া বলেন, গোল্ডেন জিপিএ দিয়া কি করবো, এখন ছেলের জীবনই বাঁচে
না। তিন মাস পর দ্বিতীয় অপারেশন করানোর কথা, ইতিমধ্যে একমাস পার হয়েছে। তিন- চার লাখ টাকার
দরকার। কিন্তু এতো টাকা কোথায় পাবো, কে দেবে..! সরকার ও সমাজের বিত্তবানরা যদি সহায্য-সহযোগিতা
করতো তাহলে আমার মেধাবী ছেলেটাকে বাঁচানো যেতো।
সিয়ামের না রুনু বেগম বলেন, ছেলের এই অবস্থায় মাঝে মাঝে অসুস্থ হয়। তখন তাকে দ্রুত হাসপাহালে নিতে হয়।
সেকারণে উপজেলা সদরে হাসপাতালের কাছাকাছি একটি বাসায় থাকি। আত্মীয়স্বজনরা কিছু সহযোগিতা করছে,
আর ওর বাবার সামান্য আয় দিয়ে বাসাভাড়া ও সংসার চলছে। দ্বিতীয় অপারেশন করাতে না পারলে আমার

ছেলের ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা পুরণ হবে না। ছেলের চিকিৎসার জন্য আমি সরকার ও সমাজের দানশীল মানুষের
সহযোগিতা চাই।
গোল্ডেন জিপিএ ৫ পাওয়া সিয়ামের ভাষ্য, আমার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন, কিন্তু আমি যদি সুস্থ না হই তাহলে
সেই স্বপ্ন অপুর্ণ থেকে যাবে। আমার চিকিৎসায় অনেক টাকার প্রয়োজন। পরিবারের পক্ষে তা বহন করা
সম্ভব না। আমি সবার সাহায্য চাই।
এব্যাপারে সিয়ামের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সিয়ার গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়ে
আমাদের মুখ উজ্জল করেছে। কিন্তু অল্প বয়সে ছেলেটি ব্রেইন‘ স্ট্রোক করায় তার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে
পড়েছে। আমরা তার চিকিৎসায় সাধ্যমতো সহযোগিতা করেছি। পরবর্তীতে আরো একটি অপারেশন করাতে হবে।
অনেক টাকার প্রয়োজন। গরীব পরিবারের পক্ষে সেই টাকা জোগাড় করা অসম্ভব। তাই অকালে এই মেধা যাতে
ঝরে না যায় সেজন্য আমি সরকারের কাছে ছেলেটির চিকিৎসায় সহযোগিতার আবেদন জানাই। #


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটেগরির আরো খবর
Theme Created By AR.Host