মহিদুল ইসলাম:
শরণখোলা উপজেলা পরিষদসংলগ্ন বান্দাঘাটা থেকে রাজৈর মারকাজ মসজিদ পর্যন্ত দুই কিলোমিটার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেরীবাধের নতুন রাস্তাটি এখন মানুষের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। হাটু সমান কর্দমাক্ত রাস্তায় চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। খোন্তাকাটা ইউনিয়নের রাজৈর ওয়ার্ডের মাটির এই রাস্তাটিতে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য খানাখন্দ। আগের পুরোনো ওয়াপদা হেরিংবন্ড রাস্তার উপর নতুন করে মাটি দিয়ে উচু বেরিবাধ করায় এমন বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে রাস্তাটি।
বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টি হলেই কর্দমাক্ত হয়ে পড়ে পুরো রাস্তাটি। এছাড়া শুষ্কমৌসুমে যানবাহন চলাচলের কারণে ধুলোয় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। বলতে গেলে সারাবছরই চলাচলের অনুপযোগীথাকে সড়কটি। এছাড়া বর্তমানে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা চলমান। শরণখোলা সরকারি ডিগ্রি কলেজওরায়েন্দা-রাজৈর ফাজিল মাদরাসার পরীক্ষা কেন্দ্র দুটি এই সড়কের পাশেই অবস্থিত। ফলে পরীক্ষার্থীদের চলাচলেও চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। কাদাপানি মাড়িয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে হচ্ছে তাদের। এমন বেহাল দশার কারণে সড়কটি এখন দুর্ভোগের সড়কে পরিণত হয়েছে।
এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন অন্তত ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শত শত ছাত্র-ছাত্রী যাওয়া আসা করে।এছাড়া উপজেলা পরিষদ এবং উপজেলা শহর রায়েন্দা বাজারে দৈনন্দিন প্রয়োজনে যাতায়াত করে হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু এই কাঁচা সড়কটি পাকা না হওয়ায় সীমাহীন দু্র্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থীসহএলাকাবাসীকে ।সড়কের এই অংশের দুই পাশে রয়েছে শরণখোলা সরকারি ডিগ্রি কলেজ, রায়েন্দা-রাজৈর ফাজিল মাদরসা,আনোয়ার হোসেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রাজৈর মারকাজ মসজিদ ও মাদরাসা, সুন্দরবন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। রয়েছে তিনটি বরফ কল, একটি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং কয়েক হাজার পরিবার ও অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া পার্শ্ববর্তী রায়েন্দা বাজার কেন্দ্রিক রয়েছে রায়েন্দা সরকারি পাইলট হাই স্কুল, আরকেডিএসগার্লস হাই স্কুল, শরণখোলা আইডিয়াল ইনস্টিটিউট, রায়েন্দা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ভাসানীকিন্ডার গার্টেন স্কুল। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রী যাতায়াত করে এই সড়ক দিয়ে। জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকলেও তা উন্নয়নে সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। জানা গেছে, সড়কের এই অংশটুকু বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৫/১পোল্ডারের আওতাধীন। বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তায় উপকূলয়ী বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পের (সিইআইপি) মাধ্যমে নির্মাণ করা হয় শরণখোলা উপজেলার ৬২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। সেই সঙ্গে কলেজ রোড হিসেবে পরিচিতি সড়কের এই অংশটিও মাটির উঁচু বাঁধ নির্মাণ করা হয়। ২০১৬ সালে শুরু হওয়ার পর ২০২৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত হয় প্রকল্পের কাজ। কাজের শুরু থেকেই শুরু হয় ভোগান্তি। এর আগে বাধের এই অংশটি এলজিইডির মাধ্যমে কার্পেটিং করা ছিল।
এব্যাপারে শরণখোলা সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. নূরুল আলম ফকির ও রায়েন্দা-রাজৈর ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আব্দুল জলিল আনোয়ারী বলেন, সড়কটি ছোট হলেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি কমপক্ষে ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে আসা যাওয়া করে। শুষ্কমৌসুমে ধুলোবালি মাড়িয়ে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ কোনোরকমে চলতে পারলেও বর্ষার সময় আর চলাচল করতে পারে না। বড় বড় গর্তে পানি জমে থাকে। পুরো সড়কে থাকে কাদাপানি। অধ্যক্ষদ্বয় আরো বলেন, বর্তমানে এইচএসসি ও আলীম পরীক্ষা চলছে। এই কাদাপানি ভেঙে পরীক্ষার্থীদের আসতে হচ্ছে কেন্দ্রে। এমনকি কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য রোগীকে হাসপাতালে নেওয়ারও উপায় থাকেনা। বর্ষা মৌসুম এলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতিও কমে যায়। তাই জনদুর্ভোগ নিরসনে সড়কটি দ্রুত পাকা করার দাবি জানাই সরকারের কাছে।
জানতে চাইলে শরণখোলা উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফেরদৌস আলম বলেন, বান্দাঘাটা থেকে রাজৈর মারকাজ মসজিদ ও মাদরাসা পর্যন্ত দুই কিলোমিটার কাঁচা সড়কের একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরী করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে পরবর্তী কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে।
প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সম্পাদক : শেখ মোহাম্মদ আলী।
সম্পাদক ও প্রকাশক :শেখ হাসান আল মাহমুদ
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :মারুফা আলী
রায়েন্দা বাজার, শরণখোলা জেলা বাগেরহাট থেকে প্রকাশিত।
মোবাইল নম্বর ০১৭১১৯০৪২০৭,০১৩১৪০৯২৪৮৭।
ই-মেইল- sarankholadarpan@gmail.com
স্বত্ব © ২০২৫ শরণখোলা দর্পণ