এস এম তাজ উদ্দিন, বাগেরহাট থেকে :
ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে বাগেরহাটে শুরু হয়েছে শারদীয় দুর্গোৎসব। মণ্ডপে মন্ডপে শাঁখ, উলুধ্বনী আর ঢাকের বাদ্য জানান দিচ্ছে দেবী এসেছেন মন্ডপে। এ বছর জেলার ৬০৫টি পূজা মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দেবী দুর্গার আরাধনা।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে ঘট স্থাপন করে ধুপদীপ মন্ত্রপাঠ সহ নানা উপাচারে দেবীকে মন্ডপে আমন্ত্রন জানানো হয়। এদিন ভক্তরা উপবাস থেকে দেবী উমা বন্দনায় অংশগ্রহণ করেন। দেবীর পায়ে অঞ্জলি নিবেদন করেন এবং পরিবার ও সমাজের শান্তি, সমৃদ্ধি ও মঙ্গল কামনা করেন।
পুরান মতে, মহালয়ার মাধ্যমে দেবী দুর্গার পৃথিবীতে আগমন হলেও ষষ্ঠীপুজার মাধ্যমে তিনি পূজামণ্ডপে অধীষ্ঠিত হন। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করে ষষ্ঠীর দিন দেবীকে আনুষ্ঠানিকভাবে পূজায় আহ্বান ও অধিষ্ঠান করানো হয়।
এবার জেলার বেশ কয়েকটি পূজা মণ্ডপে শতাধিক প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে। যার কারণে বাগেরহাট জেলা ভক্তদের মাঝে দুর্গাপূজার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে সর্বাধিক প্রতিমার পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে চিতলমারী উপজেলার চরবানিয়ারি চন্ডীভিটা সার্বজনীন পূজা মণ্ডপে। এখানে প্রায় দুই শতাধিক প্রতিমা সাজানো হয়েছে, যেখানে রামায়ণ-মহাভারত ও পৌরাণিক ধর্মীয় কাহিনীর নানা থিম ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
একই উপজেলার পাঁচপোতা গ্রামে দেড় শতাধিক প্রতিমা নিয়ে আয়োজন করা হয়েছে দুর্গাপূজা। বর্ণিল আলোকসজ্জা আর আকর্ষণীয় প্যান্ডেলে সেজে উঠেছে মণ্ডপ। একইভাবে সদর উপজেলার পোলঘাট সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরে প্রায় দেড় শতাধিক প্রতিমা স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী চুলকাঠি বনিকপাড়া মণ্ডপেও এবার ১৫১টি প্রতিমা দিয়ে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
প্রতিটি পূজা মণ্ডপেই রাখা হয়েছে আলাদা এন্ট্রি ও এক্সিট পয়েন্ট। ভেতরে ঢুকলেই চোখে পড়ছে সারি সারি প্রতিমা। শিল্পীদের নিপুণ হাতে ফুটে উঠেছে দেবী দুর্গা ও পৌরাণিক নানা চরিত্র। এর মধ্যে রয়েছে রাম-সীতার বনবাস, কৃষ্ণের কালীয় নাগ দমন, রাসলীলা, হনুমানের মূর্তি, বিষ্ণুর দশ অবতারসহ বহু পৌরাণিক দৃশ্য।
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করে নিরাপত্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন বাগেরহাট জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান।
এ সময় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিটি মণ্ডপে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মণ্ডপকেন্দ্রিক পুলিশ ডিউটির পাশাপাশি টহল টিম ও সাদা পোশাকের পুলিশও মাঠে কাজ করবে। ভিড় নিয়ন্ত্রণে প্রতিটি মণ্ডপকে এন্ট্রি ও এক্সিট পয়েন্ট আলাদা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, “বাগেরহাটে উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা সম্পন্ন হবে।”
বিভিন্ন পূজা মন্ডপ গুলোতে দুপুরের পর থেকে বাড়তে শুরু করেছে ভক্ত দর্শনার্থীর আগমন। আগামী শুক্রবার দশমী পূজার মধ্য দিয়ে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে বাগেরহাটের শারদীয় দুর্গোৎসব।
প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সম্পাদক : শেখ মোহাম্মদ আলী।
সম্পাদক ও প্রকাশক :শেখ হাসান আল মাহমুদ
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :মারুফা আলী
রায়েন্দা বাজার, শরণখোলা জেলা বাগেরহাট থেকে প্রকাশিত।
মোবাইল নম্বর ০১৭১১৯০৪২০৭,০১৩১৪০৯২৪৮৭।
ই-মেইল- sarankholadarpan@gmail.com
স্বত্ব © ২০২৫ শরণখোলা দর্পণ