ষ্টাফ রিপোর্টার:
বাগেরহাটে আবারও ৩ দিনের হরতাল অবরোধের ডাক দিয়েছেন সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি। টানা দুই দিনের হরতাল শেষে আজ সন্ধ্যায় নতুন করে হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির কো-কনভেনার এম এ সালাম।
বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহালের দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো সর্বাত্মক হরতাল বৃহস্পতিবার পালিত হয়েছে। নতুন কর্মসূচিতে আগামী সোমবার, মঙ্গলবার ও বুধবার সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক হরতালের ঘোষণা দিয়েছে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে হরতালের সমর্থকরা সড়কে আগুন জ্বালিয়ে, বেঞ্চ বসিয়ে, বাস বেঁধে ও গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ সৃষ্টি করেন। কমিটির দাবি অনুযায়ী, জেলার অন্তত ১৩৪টি স্থানে নেতাকর্মী ও স্থানীয়রা অবস্থান নেয়। ফলে মোংলা-খুলনা, মোংলা-ঢাকা, খুলনা-বরিশাল-পটুয়াখালী, খুলনা-কাটাখালি-ঢাকা, বাগেরহাট-মাওয়া-ঢাকা ও শরণখোলা-সাইনবোর্ড-ঢাকা—এই ছয়টি মহাসড়কে দূরপাল্লার সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকে।
এতে মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে যায়। বাগেরহাট বিসিক, মোংলা ইপিজেড ও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ জেলার শিল্পাঞ্চলের কলকারখানায়ও দ্বিতীয় দিনের মতো কাজ হয়নি। হরতালের প্রভাবে পুরো বাগেরহাট জেলা কার্যত সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
জেলা সদরসহ উপজেলাগুলোতে দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বীমা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। হরতালকারীরা জেলা ও উপজেলা নির্বাচন অফিস, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রবেশ করতে পারেননি। মোরেলগঞ্জে পানগুছি ও মোংলা নদীতে ফেরি চলাচলও বন্ধ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বিএনপি-জামায়াতসহ সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি সংবাদ সম্মেলন করে নতুন করে ৬ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে। এর মধ্যে রয়েছে—শুক্রবার ও শনিবার সব মসজিদে দোয়া, রোববার সরকারি অফিস-আদালত ঘেরাও এবং সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত তিন দিন সর্বাত্মক হরতাল।
সংবাদ সম্মেলনে কমিটির আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম বলেন, “নির্বাচন কমিশন যদি বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল না রাখে, তবে আরও কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”
প্রসঙ্গত, গত ৩০ জুলাই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনের বিশেষ কারিগরি কমিটি খসড়ায় বাগেরহাটের চার আসন কমিয়ে তিনটি রাখার প্রস্তাব দেয়। স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলো এর বিরোধিতা করে শুনানিতে অংশ নিলেও, গত ৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত চূড়ান্ত গেজেটে তিনটি আসনই বহাল রাখা হয়।
চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী—
বাগেরহাট-১: সদর, চিতলমারী, মোল্লাহাট
বাগেরহাট-২: ফকিরহাট, রামপাল, মোংলা
বাগেরহাট-৩: কচুয়া, মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা
এর আগে চারটি আসনে ভোট অনুষ্ঠিত হতো।
বাগেরহাট-১: চিতলমারী, মোল্লাহাট, ফকিরহাট
বাগেরহাট-২: সদর, কচুয়া
বাগেরহাট-৩: রামপাল, মোংলা
বাগেরহাট-৪: মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা
নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে ফের আন্দোলনে নেমেছে বাগেরহাটের মানুষ।
প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সম্পাদক : শেখ মোহাম্মদ আলী।
সম্পাদক ও প্রকাশক :শেখ হাসান আল মাহমুদ
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :মারুফা আলী
রায়েন্দা বাজার, শরণখোলা জেলা বাগেরহাট থেকে প্রকাশিত।
মোবাইল নম্বর ০১৭১১৯০৪২০৭,০১৩১৪০৯২৪৮৭।
ই-মেইল- sarankholadarpan@gmail.com
স্বত্ব © ২০২৫ শরণখোলা দর্পণ