আবুল আহসান টিটু, ফকিরহাট (বাগেরহাট) থেকে:
বাগেরহাটের ফকিরহাটে মাছের ঘেরে সারি সারি গাছে ঝুলছে হলুদ, সবুজ ও কালো বর্ণের অমৌসুমী তরমুজ। কৃষির নতুন এ উদ্যোগ দৃষ্টি কেড়েছে কৃষক ও উৎসুক ভোক্তাদের। আর্থিকভাবে লাভজনক হওয়ায় তরমুজ চাষে ঝুঁকছেন অনেক কৃষক। উপজেলা কৃষি বিভাগের নিয়মিত পরামর্শ ও তত্ত্বাবধানে গড়ে উঠেছে এ অমৌসুমী তরমুজ চাষ।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ফকিরহাট উপজেলার আটটি ইউনিয়নে বর্তমানে ১০ হেক্টর জমিতে ৮০ জন কৃষক মাছের ঘেরে অমৌসুমী তরমুজ চাষ করছেন। কৃষকদের বীজ, সার, প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়েছে কৃষি বিভাগ। মাছের ঘেরের আইলের উপর গাছ রোপন ও ঘেরে পানির উপর মাচা হওয়ায় বাড়তি ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে না। আবার ঘেরের আইলের উচু জমিতে জলাবদ্ধতার সময় ফসল নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।
কৃষি বিভাগ জানায়, প্রচলিত ফসলের পাশাপাশি এই ভিন্নধর্মী উদ্যোগ কৃষকদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলেছে। ঝুলন্ত রঙিন তরমুজ চাষ এখন ফকিরহাটের কৃষিতে এক নতুন সম্ভাবনা।
নলধা-মৌভোগ ইউনিয়নের কৃষক নিতুল রায় বলেন, ‘চলতি মৌসুমে প্রথমবার ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা খরচ করে ঘেরে তরমুজ চাষ করেছি। ফলন দারুণ হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছি। আশা করছি আরও দেড় লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারব।’
তরমুজ খেত থেকে প্রতি কেজি তরমুজ গড়ে ৪৫/৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া তৃপ্তি নামের হলুদ তরমুজ কেজি প্রতি ৯০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে আরো বেশি দাম।
একই এলাকার চাষী নিরাপদ বৈরাগী ও বিশ্বজিৎ সরকার জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে তারা তরমুজ চাষ করেছেন। বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় আগামী মৌসুমে আরও বেশি জমিতে চাষের পরিকল্পনা করছেন। ঘেরে উপর চাষ করায় মাছের কথা বিবেচনা করে তরমুজে কোন প্রকার রাসয়নিক কীটনাশক প্রয়োগ করা হচ্ছে না। তরমুজ চাষ পদ্ধতি নিরাপদ হওয়ায় ক্রেতাদের চাহিদাও বেশি।
ফকিরহাট বাজারের ডাকবাংলো মোড়ে তরমুজ কিনতে আসা শিক্ষক মাহবুবুর রহমান বলেন, “দুদিন আগে একটি হলুদ তরমুজ কিনেছিলাম। বেশ মিষ্টি ও সুস্বাদু হওয়ায় আজ আবার কিনতে এসেছি।”
কৃষকরা জানান, উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ আশেপাশের জেলায় যাচ্ছে এসব তরমুজ।
মৌভোগ ব্লকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিপ্লব দাস জানান, ‘অফসিজন তরমুজ একটি লাভজনক ফসল। অনেক কৃষক প্রথমবার চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। বাজারে তরমুজের চাহিদা ও দাম দুটোই ভালো।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শেখ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ফকিরহাটে তৃপ্তি, ফর্মেলো, বিগ ফ্যামিলি ও ছক্কা- এই চার জাতের তরমুজ চাষ হচ্ছে। এরমধ্যে নলধা-মৌভোগ ও লখপুর ইউনিয়নে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। কৃষকদের আগ্রহ দেখে মনে হচ্ছে আগামীতে আরও বেশি জমিতে তরমুজ চাষ হবে।
প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সম্পাদক : শেখ মোহাম্মদ আলী।
সম্পাদক ও প্রকাশক :শেখ হাসান আল মাহমুদ
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :মারুফা আলী
রায়েন্দা বাজার, শরণখোলা জেলা বাগেরহাট থেকে প্রকাশিত।
মোবাইল নম্বর ০১৭১১৯০৪২০৭,০১৩১৪০৯২৪৮৭।
ই-মেইল- sarankholadarpan@gmail.com
স্বত্ব © ২০২৫ শরণখোলা দর্পণ