বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বার্তা তুলে ধরে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে সজাগ থাকার এবং দেশের গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এ দেশের নাগরিক। তাঁদের নিরাপত্তা দেওয়া বিএনপির নৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক দায়িত্ব।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩টায় নগরীর একটি অভিজাত হোটেলে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণ ও নির্বিঘ্নে উদ্‌যাপনের লক্ষ্যে দলের সকল স্তরের নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা নিশ্চিত করতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনার বাস্তবায়নে খুলনা বিভাগীয় বিএনপির সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি তারেক রহমানের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, আমরা সরকারের কাছে যে মানদণ্ড আশা করবো, আমাদের নিজেদেরও সেই মানদণ্ডে উন্নীত করতে হবে। জামায়াত ও পতিত ফ্যাসিবাদীরা যোগসাজশে করছে। বুদ্ধিমত্তার সাথে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বানচাল করতে ফ্যাসিবাদ ও গুপ্ত রাজনৈতিক দলগুলো একাট্টা হয়েছে। তারা পূজা মণ্ডপগুলোকে টার্গেট করেছে। পূজা উৎসবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকলকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল বলেন, বাংলাদেশ এক কঠিন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে এবং নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে-দুষ্কৃতিকারীরা ততই সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে, যারা নির্বাচনকে পেছাতে চায় এবং দেশের গণতন্ত্র ব্যাহত করতে চায়। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে, তারাই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করেছে। যারা সুযোগ সন্ধানী এবং নির্বাচন বানচাল করতে চায়, তাদের ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। একে অপরের ওপর দায়িত্ব না চাপিয়ে যার যার অবস্থানে থেকে সজাগ থাকতে হবে। জেলা, থানা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকে নিজ নিজ এলাকায় সতর্ক থাকতে হবে।

খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) অনিন্দ ইসলাম অমিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল। কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু ও খুলনা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিনের পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন, খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি এড. শফিকুল আলম মনা, বাগেরহাট জেলার সমন্বয়ক এম এ সালাম, নড়াইল জেলার সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম, যশোর জেলার সভাপতি সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, সাতক্ষীরা জেলার সভাপতি রহমত উল্লাহ পলাশ, ঝিনাইদহ জেলার সভাপতি এম এ মজিদ, মাগুরা জেলার সভাপতি আলী আহম্মেদ, চুয়াডাঙ্গার সভাপতি শরীফ উদ্দিন, মেহেরপুরের সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন, এড. মোমরেজুল ইসলাম, দেলোয়ার হোসেন খোকন, ইঞ্জি. জাকির হোসেন, আবু জাহিদ ডাব্লু, মোজাফ্ফার আলম, মনিরুল ইসলাম, মানোয়ার হোসেন, এড. কামরুল ইসলাম প্রমুখ।

সভায় সর্বসম্মতিক্রমে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপুজায় কোন প্রকার অপ্রীতিকর কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার চক্রান্ত যাতে কেউ করতে না পারে-সে বিষয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, সংহতি ও সকল ধর্মের মানুষের নির্বিঘ্নে ধর্ম পালনের অধিকারে বিশ্বাসী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির নেতা-কর্মীরা সার্বক্ষণিক সতর্ক ও সজাগ দৃষ্টি রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যাতে পূজাকে কেন্দ্র করে পতিত স্বৈরাচারের অনুচরেরা কিংবা দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট ও চক্রান্তকারীরা কোন অপতৎপরতা চালাতে না পারে। সভা থেকে স্ব স্ব এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষরা যাতে নির্বিঘ্নে, শান্তি ও স্বস্তি সহকারে উৎসব পালন করতে পারে সেজন্য দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভা থেকে দুর্গাপুজাকে কেন্দ্র করে জেলা ও মহানগরের অধীন প্রত্যেক উপজেলা/থানা/পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে পূজামণ্ডপের জন্য পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সদস্যবৃন্দ এবং বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সমন্বয়ে স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করে দিনরাত পাহারার ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভা থেকে বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকবৃন্দ স্ব স্ব বিভাগের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবেন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।