ভারতের উত্তর প্রদেশের কানপুর শহরে ঈদে মিলাদ-উন-নবী পালনের সময় ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ ব্যানার লাগানোর ঘটনায় ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই ঘটনায় এফআইআর দায়ের হয়েছে এবং ভারতের বিভিন্ন শহরে মুসলমানরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। কিছু এলাকায় গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
কাশীপুরে রোববার ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ ব্যানার নিয়ে মিছিলের সময় পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি হয়। এ ঘটনায় আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একই ধরনের একটি মিছিল উন্নাওতে হওয়ার পর পাঁচজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। অনেকেই অভিযোগ করছেন যে নিজেদের ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রকাশের কারণে মুসলিমরা লক্ষ্যবস্তু হয়েছেন।
কানপুরে পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (পশ্চিম) দীনেশ ত্রিপাঠি জানান, মিলাদ-উন-নবীর চিরাচরিত শোভাযাত্রা নির্ধারিত জায়গায় না হয়ে অন্য জায়গায় ব্যানার লাগানোয় বিরোধ সৃষ্টি হয়। পরে দুই পক্ষের ঐকমত্যে ব্যানার মূল স্থানে স্থাপন করা হয়। তিনি দাবি করেছেন, এফআইআর ব্যানার লাগানোর জন্য নয়, শোভাযাত্রার প্যান্ডেল পরিবর্তন এবং পোষ্টার ছিঁড়ে দেয়ার জন্য দায়ের করা হয়েছে।
লক্ষ্ণৌয়ে কয়েকজন নারী রাজ্য বিধানসভার প্রবেশপথে ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। তাদের মধ্যে কিছু যুবককেও আটক করা হয়। সুমাইয়া রাণা বলেন, ‘মুসলিমদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের জন্য এভাবে মামলা দায়ের করা হচ্ছে। এটি বরদাস্তযোগ্য নয়।’
উন্নাও, বহরাইচ ও আলিগড়সহ অন্যান্য শহরেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। গোধরা ও মুম্বাইয়ে মিছিল এবং ব্যানার প্রদর্শনের কারণে গ্রেপ্তার ও মামলা হয়েছে।
মানবাধিকার কর্মীরা অভিযোগ করছেন, ছোট ঘটনাগুলোকে বড় করে মুসলিমদের নিশানা করা হচ্ছে। সামাজিক সংগঠন ‘ইউনাইটেড এগেইনস্ট হেট’-এর সদস্য নাদিম খান বলেন, ‘কানপুরে যা ঘটেছে, তা মুসলিমদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। এটি প্রথমবারের ঘটনা নয়। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার চেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।’
কংগ্রেসের সংসদ সদস্য ইমরান প্রতাপগড়ী প্রশ্ন তুলেছেন, যদি নবী মুহাম্মদের প্রতি ভালবাসা প্রকাশ করা অপরাধ হয়, তাহলে ভারতের ৩০ কোটি মুসলিমের বিরুদ্ধে কি মামলা হবে? তবে তিনি সতর্ক করেছেন যে, অনুমতি ছাড়া মিছিল করা ঠিক নয়।
তবে বিজেপি দাবি করেছে, কারও ধর্মীয় পরিচয় দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না; যারা আইন ভঙ্গ করছেন, তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বিবেক কুমার বলেন, ‘ছোট ছোট ঘটনার ওপর যে প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে, তা সংখ্যালঘু মুসলিমদের মধ্যে পৃথক হয়ে যাওয়ার অনুভূতি তৈরি করছে। আইন বা নিয়ম ভেঙে মিছিল করা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, কিন্তু ধর্মীয় স্বাধীনতা ব্যক্ত করার জন্য এফআইআর দায়ের করা উচিত নয়।’
এই পরিস্থিতি ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে এবং সামাজিক মাধ্যমে ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ ব্যানারের ছবি পোস্ট করে প্রতিবাদও দেখা যাচ্ছে।
সূত্র:বিবিসি
প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সম্পাদক : শেখ মোহাম্মদ আলী।
সম্পাদক ও প্রকাশক :শেখ হাসান আল মাহমুদ
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :মারুফা আলী
রায়েন্দা বাজার, শরণখোলা জেলা বাগেরহাট থেকে প্রকাশিত।
মোবাইল নম্বর ০১৭১১৯০৪২০৭,০১৩১৪০৯২৪৮৭।
ই-মেইল- sarankholadarpan@gmail.com
স্বত্ব © ২০২৫ শরণখোলা দর্পণ